নাটোরে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন শুরু
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশু আছিয়া মৃত্যুর পর শোক প্রকাশ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘এই মৃত্যু কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি সারা দেশের মানুষের জন্য লজ্জাজনক ঘটনা। এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ এই ধরনের অপরাধ ঘটানোর সাহস না পায়।’
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে তারেক রহমান এসব কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পোস্টে উল্লেখ করেছেন, ‘মাগুরায় ধর্ষণের শিকার আট বছর বয়সী শিশু আছিয়া কয়েক দিন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আছিয়ার মৃত্যু সারা দেশের মানুষের মতো আমাকেও গভীরভাবে ব্যথিত করেছে। তার মৃত্যুর খবর শুনে গোটা দেশ স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। এই মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না এবং পুরো দেশকে লজ্জিত করেছে।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আছিয়ার উপর ঘটে যাওয়া পাশবিক ঘটনার প্রতিবাদে শহর থেকে গ্রামে আন্দোলন শুরু হয়েছে। রাজপথে মিছিল ও স্লোগানে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। একই সাথে তার ফিরে আসার জন্য সবাই প্রার্থনা করছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর সিএমএইচ থেকে আসা খবর এলাকায় শোক ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। লোকজন মানুষরূপী কুলাঙ্গারদের ধিক্কার জানাচ্ছে।’
তারেক রহমান জানান, ‘এই ঘটনার খবর পাওয়ার পর আমি তার চিকিৎসা ও আইনি সহায়তার ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছিলাম। পূর্বের ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে ধর্ষকদের বিচার না করে তাদের পুরস্কৃত করার ফলে দেশে এই ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটছে। বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়ায় ধর্ষকরা আইনের ফাঁক দিয়ে রক্ষা পেয়ে যাচ্ছে, ফলে ধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে।’ তিনি বলেন, ‘ধর্ষণ শুধু একটি অপরাধ নয়, এটি মানবতার বিরুদ্ধে একটি ভয়াবহ আঘাত এবং সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের প্রমাণ। আমাদের সমাজে ঘটে চলা এমন বর্বরোচিত ঘটনাগুলো মানবতা ও নৈতিকতার মৌলিক ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এমনকি পবিত্র রমজান মাসেও ধর্ষণ থামছে না। দেশের বিভিন্ন জায়গায় নারী ও শিশুদের ওপর নিপীড়ন, হেনস্তা ও ধর্ষণ চলছে, যার বিরুদ্ধে সমাজের সব স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট গণ অভ্যুত্থানের পর নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা বা হয়রানির ঘটনা প্রত্যাশিত ছিল না, কিন্তু তবুও তা ঘটছে। নারী, কিশোরী ও শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা মানবাধিকার লঙ্ঘন, তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। একটি বিস্তৃত শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলে নারীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন। ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আইনিভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি সমাজে শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ঘটনা শুধু বর্তমান সমাজকে কলুষিত করছে না, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও একটি ভয়ংকর দৃষ্টান্ত রেখে যাচ্ছে। এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ এই ধরনের অপরাধ ঘটানোর সাহস না পায়।’
তারেক রহমান আছিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবার ও তাদের শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta