পাগলা মসজিদে দানের অর্থ ব্যয়ের স্থান
বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থাপনা হলো কিশোরগঞ্জ সদরের নরসুন্দা নদীর পাড়ে অবস্থিত পাগলা মসজিদ ও ইসলামী কমপ্লেক্স। তিন তলা বিশিষ্ট এই মসজিদে একটি উঁচু মিনার রয়েছে। এটি মোট ৩ একর ৮৮ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত এবং ১৯৭৯ সালের ১০ মে থেকে এটি ওয়াকফ স্টেটের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়ে আসছে।
এই প্রসিদ্ধ মসজিদে নিয়মিত বিপুল পরিমাণ অর্থ, স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রা দান করেন মানুষ। প্রতি চার মাস অন্তর দানসিন্দুকগুলো খোলা হয়।
শনিবার সকালে পাগলা মসজিদের ১১টি দানবাক্স খোলা হলে পাওয়া যায় ২৮ বস্তা টাকা, প্রচুর স্বর্ণালংকার এবং বৈদেশিক মুদ্রা। বিকেল ৩টা পর্যন্ত হিসাব করে দেখা যায় এবার আগের সব রেকর্ড ভেঙে প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা পাওয়া গেছে।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ১ হাজার ও ৫০০ টাকার বান্ডিলে গোনা ৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা রূপালী ব্যাংকে জমা পাঠানো হয়।
অনেকে জানতে চান এত দানের টাকা কোথায় ব্যয় হয়। মসজিদ কমিটি জানায়, এসব অর্থ দিয়ে একটি বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।
এই প্রকল্পে ছয়তলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক পাগলা মসজিদ ও ইসলামী কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে, যেখানে একসঙ্গে ৫০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। নারীদের জন্য থাকবে আলাদা পাঁচ হাজার জনের নামাজের ব্যবস্থা।
এ প্রকল্পের জন্য ইতোমধ্যে প্রকৌশল পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা নকশা যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত করলে দরপত্র আহ্বান করে নির্মাণকাজ শুরু হবে। এই প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা।
মসজিদ কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান জানান, মসজিদ কমপ্লেক্সের ব্যয় নির্বাহ করার পর অবশিষ্ট অর্থ ব্যাংকে সংরক্ষণ করা হয়।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০২৩ সালের ৯ ডিসেম্বর দানসিন্দুক খোলা হলে রেকর্ড ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়া যায়। এছাড়া স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রাও ছিল। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ২০ এপ্রিল দানসিন্দুক খুলে পাওয়া যায় ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা এবং আরও স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রা। এরপর ২০২৪ সালের ১৭ আগস্ট খোলা হলে পাওয়া যায় ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার টাকা, এবং একইভাবে ৩০ নভেম্বর পাওয়া যায় ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৬ টাকা ব্যাংকে জমা হয়েছে।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta