উখিয়ায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪
উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কাছে পারিবারিক জমি সংক্রান্ত বিরোধে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুই পুরুষ এবং দুই নারী রয়েছেন। তারা হলেন, স্থানীয় বাজার মসজিদের খতিব ও জামায়াতের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আমির মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন (৪৪), আব্দুল মান্নান (৩৪), তার বড় দুই বোন শাহিনা বেগম (৩৮) এবং রওশন আরা (৪২)।
আব্দুল মান্নানের আরেক বোন পিংকি কক্সবাজার ডিজিটাল হাসপাতালে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন এবং তার অবস্থা গুরুতর। নিহত মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুনের ছোট ভাই আব্দুল হামিদ চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন। নিহতরা চাচাতো-জেঠাতো ভাইবোন।
এ ঘটনায় এলাকায় গভীর শোক এবং উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনাটি ঘটে ৬ এপ্রিল সকালবেলায়, যেখানে জমি নিয়ে আপন চাচাতো এবং জেঠাতো ভাইবোনদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে ২ পুরুষ এবং ১ নারী নিহত হন।
পরের দিন ৭ এপ্রিল জানাজা শেষে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়। তবে আহত রওশন আরা চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ এপ্রিল রাত ১টায় মৃত্যুবরণ করেন।
স্থানীয়দের মতে, এক সময়ের পারিবারিক সম্পর্ক এখন ভয়াবহ শত্রুতায় রূপ নিয়েছে। সংঘর্ষে দা-কুড়াল এবং দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করা হয়, যা অত্যন্ত বিরল এবং দুঃখজনক। আহত একজন বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন এবং তার অবস্থা এখন অনেকটা স্থিতিশীল।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আরিফ হোছাইন জানান, এই ঘটনায় উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে এবং এখন পর্যন্ত ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে এবং পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং একটি জটিল পারিবারিক বিরোধের ফল। আমরা দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। এলাকায় এখন উত্তেজনা রয়েছে এবং কেউ কেউ আতঙ্কিত হয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মুরুব্বিরা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন যাতে এমন ঘটনা পুনরাবৃত্তি না হয়। এক স্থানীয় শিক্ষক বলেন, রক্তের সম্পর্কের মধ্যে এমন ভয়াবহ শত্রুতা আমাদের সামাজিক কাঠামোকে দুর্বল করে দিচ্ছে। পারিবারিক বিরোধের আইনগত সমাধান না হলে ভবিষ্যতে আরও বড় বিপর্যয় হতে পারে। এই ঘটনা শুধু একটি পারিবারিক দ্বন্দ্ব নয়, বরং সামাজিক মূল্যবোধ, আইনের প্রয়োগ এবং সচেতনতার অভাবের একটি করুণ চিত্র।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta