যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টে ফ্ল্যাট নিয়ে টিউলিপের অসত্য দাবি
যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিককে ৬ লাখ পাউন্ড মূল্যের বাংলাদেশি ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ব্রিটিশ সংবাদপত্র ডেইলি মেইল শনিবার (৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশে তার নামে থাকা ফ্ল্যাটটি তিনি তার বোনের নামে দাবি করেছিলেন, যা যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে ভুলভাবে উল্লেখ করেছিলেন।
ডেইলি মেইল অনুসন্ধানে জানতে পারে যে ঢাকা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে থাকা রেকর্ড অনুযায়ী, ফ্ল্যাটটির প্রকৃত মালিক এখনও টিউলিপ সিদ্দিক। তবে ৪২ বছর বয়সী টিউলিপ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি ডেইলি মেইলকে বলেছেন, ২০০২ সালে তার বাবা-মা তাকে ফ্ল্যাটটি উপহার দেন এবং ২০১৫ সালের মে মাসে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর এটি আইনগতভাবে তার বোন আজমিনার (৩৪) নামে হস্তান্তর করেছেন।
তবে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুরোধে, ছয় লাখ পাউন্ড মূল্যের ফ্ল্যাটটি বাংলাদেশ সরকার জব্দ করেছে এবং তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। যুক্তরাজ্যের ওয়েস্ট মিনস্টার রেজিস্টারে এমপির সম্পদ সম্পর্কিত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত টিউলিপ এবং তার পরিবারের সদস্যের মধ্যে যৌথ মালিকানায় ছিল এই সম্পত্তি। এরপরই তিনি এটি তার বোনের নামে হস্তান্তর করেন। ডেইলি মেইল অনুসন্ধান করে জানতে পারে, এখনও ফ্ল্যাটটির মালিক টিউলিপ সিদ্দিক, যা বাংলাদেশের দুদক দাবি করছে। এখন বাংলাদেশের আদালত এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
গত মাসে দুর্নীতি দমন কমিশন জানায় যে, ২০১৫ সালে ফ্ল্যাটটি আজমিনার নামে হস্তান্তর করতে টিউলিপ ‘হেবা’ নামক ইসলামিক দলিল ব্যবহার করেছিলেন, যা একজন ব্যক্তি স্নেহ বা ভালোবাসা থেকে নিজের সম্পদ অন্যকে দেওয়ার জন্য ব্যবহার করে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বাংলাদেশি আইন অনুসারে ফ্ল্যাট হস্তান্তর বৈধ তখনই হয় যখন সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে মালিকানা পরিবর্তনের নথি নিবন্ধিত হয়।
দুদক দাবি করেছে, হেবা দলিলটি ছিল ‘ভুয়া’, কারণ যে ব্যারিস্টার এটি সত্যায়িত করেছিলেন, তিনি তার স্বাক্ষর নকল করার কথা অস্বীকার করেছেন।
তবে টিউলিপের আইনজীবীরা বলেন, হেবা দলিলটি যথাযথভাবে সম্পাদিত হয়েছে এবং ফ্ল্যাটটি ‘একটি পরিবারের সদস্যের সঙ্গে যৌথ মালিকানায়’ ছিল, কারণ এর সমস্ত ভাড়া তার বোন আজমিনা পেতেন।
গত শুক্রবার রাতে টিউলিপের আইনজীবী পল থোয়েট বলেন, একজন বাংলাদেশি আইন বিশেষজ্ঞ তাকে জানিয়ে বলেছেন যে হেবা দলিলটি মালিকানা হস্তান্তরের জন্য যথেষ্ট এবং সংসদে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগটি ‘অযৌক্তিক’।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta