এবার ইউক্রেনের বন্দর দখলের চেষ্টা করছে পোল্যান্ড

রাশিয়ার সামরিক শক্তির সামনে ধ্বংসপ্রাপ্ত ইউক্রেনের সম্পদের ওপর শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, এখন ইউরোপও নজর দিয়েছে। পোল্যান্ডের কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন উপমন্ত্রী মিশাল কোলোডজিজ্যাক বলেছেন, ইউক্রেনের কৃষ্ণ সাগরের বন্দর ওডেসার একটি অংশ আমাদের অধিগ্রহণ করা উচিত শস্য পরিবহনের জন্য।

ওডেসা একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর যা গম, ভুট্টা ও সূর্যমুখী তেল রফতানির জন্য পৃথিবীজুড়ে পরিচিত। এটি ১৭৯৪ সালে রাশিয়ান সাম্রাজ্য দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়, যেখানে আগে একটি তুর্কি দুর্গ ছিল।

ইউক্রেনীয়দের কাছে ওডেসা বন্দরের একটি ঘাট বিক্রি বা ৫০ বছরের জন্য বন্দরটি লিজ নিতে পোলিশ মন্ত্রী প্রস্তাব দিতে চান। তিনি পোল্যান্ডের জন্য একটি নিজস্ব শস্য বন্দর গঠনের পরিকল্পনা করেছেন। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) পোলস্যাট নিউজে তিনি এ কথা জানিয়েছেন।

মিশাল কোলোডজিজ্যাক আরো বলেন, ওডেসায় এমন একটি স্থান পাওয়া যেতে পারে যেখানে পোল্যান্ড এবং ইউরোপীয় শস্য পরিবহন করা হবে। এর মাধ্যমে কৃষ্ণ সাগরে পোল্যান্ডের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা হবে। তার মতে, দক্ষিণ-পূর্ব পোল্যান্ড থেকে শস্য রপ্তানির জন্য এই বন্দর ব্যবহার করা যেতে পারে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) ইউক্রেনের যোগদানের বিপক্ষে উপমন্ত্রী মিশাল। তিনি বলেন, “আমি ভয় পাচ্ছি। কারণ এর পর কি হবে, তা কেউ জানে না। ইউক্রেন যদি ইইউ-তে যোগ দেয়, তবে পোলিশ কৃষিতে ১০ বছরের জন্য ইউক্রেনীয় নাগরিকদের বিনিয়োগ নিষিদ্ধ করা উচিত।”

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেওয়ার আবেদন জানায় এবং ব্রাসেলস ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনায় বসে।

রাশিয়া বারবার ওডেসা বন্দরের অবকাঠামোতে আঘাত করেছে, কারণ তারা দাবি করেছে যে, ইউক্রেনীয় বাহিনী জলপথটি আত্মঘাতী ড্রোন হামলার জন্য ব্যবহার করছে।

২০২২ সালের জুলাই মাসে, রাশিয়া এবং ইউক্রেন জাতিসংঘ সমর্থিত একটি চুক্তিতে পৌঁছায়, যাতে ইউক্রেনের বন্দর থেকে শস্য জাহাজের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করা হয়। তবে ২০২৩ সালে রাশিয়া এই চুক্তি থেকে সরে আসে, কারণ পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে ব্যর্থতা অভিযোগ করে।

রাশিয়া গত মাসে বলেছিল, যদি পশ্চিমারা খাদ্য এবং সার রপ্তানিতে জড়িত ব্যাংক ও কোম্পানিগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে, তবে তারা চুক্তিতে ফিরে আসবে। বর্তমানে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি আলোচনা নিয়ে রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র একটি সামুদ্রিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি আলোচনা করছে।