নির্বাচনী আলোচনা আগস্ট-সেপ্টেম্বরে
নির্বাচন কমিশন চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। আগামী ডিসেম্বরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্য নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অক্টোবরে তফসিল ঘোষণা হতে পারে। জুলাইয়ের মধ্যে প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নির্বাচনি সংলাপ করার পরিকল্পনা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। এই সংলাপে দলগুলোর কাছে প্রস্তুতি তুলে ধরা হবে। তফসিল ঘোষণার আগে ছয় মাসের নির্বাচনি রোডম্যাপ নিয়ে এগোচ্ছে ইসি।
ইসির কর্মকর্তাদের মতে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। ২০ এপ্রিল পর্যন্ত নির্ধারিত শর্ত পূরণ করে আবেদন করার আহ্বান জানানো হয়েছে। ডিসেম্বরে ভোট হওয়ার লক্ষ্যে অক্টোবরে তফসিল দেওয়া হতে পারে। নতুন দলগুলোর আবেদন যাচাই করতে তিন থেকে চার মাস সময় লাগবে। এই কারণে আগস্টের মধ্যে সব কাজ শেষ করতে চায় নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়া নির্বাচনি মালামাল সংগ্রহ ও আইনগত কাজের শেষ পর্যায়ে যাবে জুলাই-আগস্টের মধ্যে।
নির্বাচন প্রস্তুতি এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন সম্পর্কে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘আমরা আগস্টের মধ্যে সব কাজ শেষ করে ফেলব। আগস্টের আগেই আমরা পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারব।’
নির্বাচনি মালামাল সংগ্রহ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা ডিসেম্বরে নির্বাচন করার লক্ষ্য নিয়েছি। অর্থবছর শুরু জুলাইয়ে, তাই ভোটের কাগজ, ব্যালট পেপারসহ অন্যান্য মালামাল কেনার প্রক্রিয়া আগামী অর্থবছরের অংশ হবে। আমরা এই বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করে বরাদ্দ পেতে সরকারের কাছে পাঠাব।’ সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আইনের সংশোধনী হাতে আসলেই কাজ শুরু হবে। আমাদের প্রস্তুতি বেশ এগিয়ে চলছে।’ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে তিনি জানান, ‘ভোটার তালিকা, ভোট কেন্দ্র, সংসদীয় আসনবিন্যাস, পর্যবেক্ষক নীতিমালা এবং সাংবাদিক নীতিমালা সম্পর্কে কাজ শেষ হওয়ার পরই নির্বাচনি সংলাপে অংশ নেব। তফসিল ঘোষণার কিছুদিন আগে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসব।’ তিনি বলেন, ‘অক্টোবরের দিকে তফসিল ঘোষণা হওয়ার কথা ভাবলে, আগস্ট-সেপ্টেম্বরে সেগুলো শেষ করতে হবে।’ সব কিছু মিলিয়ে জুলাইয়ের মধ্যে সব প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, ইসি সচিবালয় “তফসিল ঘোষণার পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী কার্যক্রম” শীর্ষক একটি খসড়া কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে সব কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি কাজের নির্ধারিত সময়সীমা মেনে কার্যক্রম চলছে। জানা গেছে, ইসির কর্মপরিকল্পনায় সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি সিটি করপোরেশন, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদসহ স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনের বিষয়ও থাকবে। সূত্র জানায়, কমিশনের সংস্কার পরিকল্পনা হাতে এলে নির্বাচন কমিশন অনেক কাজ চূড়ান্ত করবে। নির্বাচন কমিশনকে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশসহ (আরপিও) অন্যান্য নির্বাচনি আইন সংশোধন করতে হবে। তাই নির্বাচনের প্রস্তুতি, আইন সংস্কার, ভোটার তালিকা, সংসদীয় আসন নির্ধারণ, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন, রাজনৈতিক দলের সংলাপ – এসব প্রস্তুতির সঙ্গে নির্বাচনি সংলাপের মাধ্যমে স্বচ্ছতা আনা হবে।
ইসির একটি সূত্র জানিয়েছে, সংসদ ও উপজেলা নির্বাচনের ব্যালট পেপারসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনাকাটার পরিকল্পনা রয়েছে। সংসদ নির্বাচন ছাড়া উপজেলা-সিটি সহ স্থানীয় নির্বাচনে তিন রঙের কাগজের ব্যালট পেপার ব্যবহার করা হয়। হলুদ, নীল ও গোলাপি রঙের কাগজ দিয়ে ব্যালট পেপার ছাপানো হয়। এ ছাড়া নির্বাচনী মালামালের মধ্যে ব্যালট পেপারের কাগজ, স্ট্যাম্প প্যাড, অফিশিয়াল সিল, মার্কিং সিল, ব্রাশ সিল, লাল গালা, আমকাঠের প্যাকিং বাক্স, অমোচনীয় কালি, বিভিন্ন ফরম, প্যাকেট, সুই-সুতা, খাম, মোমবাতি ইত্যাদি জিনিসও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta