স্বাগতম হামজা
তিনি আসছেন। আগেও এসেছেন, তবে এবারের আগমন একেবারে আলাদা। তার আগমনের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য আগের মতো নয়। এই বার তিনি শুধু বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসছেন না, বরং ফুটবল মাঠে নতুন চমক দেখাতে আসছেন। হামজা দেওয়ান চৌধুরী এবার বাংলাদেশে এসে ফুটবল দুনিয়া কাঁপানোর জন্য প্রস্তুত। তার আগমনে মিশে রয়েছে নতুন স্বপ্ন, নতুন আশা এবং ফুটবলের নতুন সম্ভাবনা। দেশের ফুটবলপ্রেমীরা তার আগমনের অপেক্ষায় দিন গুনছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আজ সকালে সিলেটের এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন হামজা। এরপর যাবেন হবিগঞ্জ, পূর্বপুরুষের বাড়িতে, তারপর ঢাকায় এসে যোগ দেবেন জাতীয় দলের ক্যাম্পে। বাংলাদেশের ফুটবলে শুরু হবে নতুন অধ্যায়। হামজা চৌধুরীকে নিয়ে বাংলাদেশে বহু আলোচনা হয়েছে, যার মাধ্যমে তার পরিচয়ের নতুন কিছু নেই। লিস্টার সিটির যুব দলের সদস্য হিসেবে তিনি ২০০৫ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ছিলেন। ২০১৬ সালে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জিতে সিনিয়র দলের সদস্য হিসেবে অভিষেক ঘটে। তবে লোনে তিনি খেলেছেন বুরটন আলবিওনে। এফএ কাপ ও কমিউনিটি শিল্ড জয় তার ক্যারিয়ারে বিরাট অর্জন। বর্তমানে তিনি শেফিল্ড ইউনাইটেডে খেলছেন। এই ক্লাবে তিনি সফলভাবে নিজের স্থান ধরে রেখেছেন। তার ম্যাচ খেলার পরই সিলেটের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা। তার লক্ষ্য ২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে মাঠে নামা।
বাফুফে সভাপতি তাবিথ আওয়াল জানিয়েছেন, হামজা সোমবার আসবেন এবং সিলেট থেকে হবিগঞ্জ যাবেন। তারপর ঢাকায় এসে জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দেবেন। বাফুফে সহসভাপতি ফাহাদ করিম জানিয়েছেন, হামজাকে সিলেটেই উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হবে। ১৯ মার্চ মিডিয়ার সামনে আসবেন তিনি। বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীরা অনেক তারকা দেখেছে, তবে হামজার মতো বিদেশে বেড়ে ওঠা খেলোয়াড়ের জন্য এমন উন্মাদনা আগে হয়নি। তার আন্তর্জাতিক খ্যাতি এবং ইংল্যান্ডের যুব দলে খেলা বড় বিষয়। তবে এর পেছনে আরও একটি কারণ আছে।
কিছু বছর আগেও বাংলাদেশের ফুটবল ছিল বিপর্যয়ের মধ্যে, যেখানে ছোট দেশ ভুটানও আমাদের হারিয়ে দিত। তবে কোচ হাভিয়ের কাবরেরা দলের দুঃসময় কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করেছেন। তপু বর্মণ, জামাল ভূইয়া, রাকিব, মোরসালিনদের মতো নতুন তারকারা উঠে এসেছেন। এরপরও বাংলাদেশের ফুটবলে আশার আলো ছিল অনেক দূরে। হামজা চৌধুরী বাংলাদেশে খেলার অনুমতি পাওয়ার পর, সেই আলো আরেকটু কাছাকাছি চলে এসেছে। বাংলাদেশে ফুটবলপ্রেমীরা এখন নতুন স্বপ্ন দেখছেন। কতটা সফল হবে তা সময়ই বলে দেবে, তবে হামজা চৌধুরী বাংলাদেশের ফুটবল বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। তাই তাকে স্বাগত জানাতে বাংলাদেশবাসী ফুলের সাথে অপেক্ষা করছে, এবং সিলেট পুলিশও নিরাপত্তার ব্যবস্থা প্রস্তুত করেছে।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta