রাস্তা দখল করে ঘর তৈরি, চলাচলে সমস্যা, ২০০ পরিবার দুর্ভোগে
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের রামনগর কবরস্থান সংলগ্ন সরকারি একটি রাস্তায় হঠাৎ করে এক ব্যক্তি একটি টিনের ছাপড়া ঘর নির্মাণ করে অন্তত ২০০ পরিবারের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করেছেন। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে ব্যবহৃত ওই রাস্তায় এমন ঘর স্থাপনের কারণে সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, রামনগর গ্রামের লালন নামক এক ব্যক্তি সম্প্রতি রাস্তার ওপর ঘর নির্মাণ করেন। এর ফলে এলাকাবাসী অভিযোগ তুলে ভাঙ্গুড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রামনগর কবরস্থানের পাশ দিয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তাটি খা পাড়া, দক্ষিণ পাড়া, রামনগরসহ অন্তত শতাধিক পরিবারের মানুষের চলাচলের একমাত্র পথ। এটি ভাঙ্গুড়া-তাড়াশ সড়কের সংযোগ রাস্তাও। স্থানীয় জমি দান এবং সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে রাস্তাটি নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়। সর্বশেষ গত বছর ২ লাখ ৫৪ হাজার টাকার সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে রাস্তার মাটি ভরাট কাজ সম্পন্ন হয়।
তবে প্রায় ১০-১২ দিন আগে লালন নামক ব্যক্তি তার জমির অংশ দাবি করে রাস্তার ওপর একটি ঘর নির্মাণ করেন। এতে মৃতদেহ কবরস্থানে নেওয়া, স্কুল-কলেজ, হাট-বাজার ও দৈনন্দিন চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা উদ্দিন হোসেন ও আব্দুল মজিদ বলেন, “এত বছর ধরে আমরা এই রাস্তা ব্যবহার করছি। কেউ কখনো বাধা দেয়নি। হঠাৎ একজন এসে রাস্তার মাঝে ঘর তুলে আমাদের কষ্টের কারণ হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক।”
অন্য এক বাসিন্দা মুনজিল বলেন, “লালন এখানে থাকেন না, তিনি ঢাকায় থাকেন। তার গ্রামের বাড়ি বরিশালে, শ্বশুরবাড়ি এই গ্রামে। অথচ তিনি এসে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। আমরা কোনো উপায় না পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গিয়ে অভিযোগ করেছি। তিনি সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর অভিযোগ দিতে বলেন। আমরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
স্থানীয় বিএনপি নেতা খোকন বলেন, “আমি লালনকে বলেছি, গ্রামবাসী জমির ন্যায্য মূল্য দিতে প্রস্তুত, তুমি রাস্তা দাও। কিন্তু সে উল্টো সাতজনের নামে মামলা করেছে এবং ১৪৪ ধারা জারি করেছে।”
খানমরিচ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন খান মিঠু বলেন, “গত বছর ওই রাস্তায় সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করেছিলাম। তখন সে কোনো আপত্তি করেনি। এখন হঠাৎ করে বাধা সৃষ্টি করছে। আমি বলেছি, জমির মূল্য দিতে প্রস্তুত, তবুও সে মামলা করেছে।”
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসমিয়া আক্তার রোজি বলেন, “লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুন নাহার বলেন, “বিষয়টি সরেজমিনে পরিদর্শন করতে এসিল্যান্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি তাকে পুনরায় বলব, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য।”
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta