যশোরে শিশু ধর্ষণ মামলার এক দশক পর ধর্ষক আব্দুল খালেক গ্রেপ্তার
বিস্ময়কর সমুদ্রের নীল জলরাশি। প্রতিদিন নতুন সূর্য পূর্ব আকাশে এক অপূর্ব দৃশ্য উপহার দেয়। আবার বেলা পেরিয়ে সূর্যাস্তের দৃশ্য নতুন এক সৌন্দর্য নিয়ে আসে। গোধূলির সময় পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ সূর্যাস্তের দৃশ্যকে আরও মুগ্ধকর করে তোলে। বঙ্গোপসাগরের উপকূলে এক শান্তিপূর্ণ স্থানে, সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটা অবস্থিত। এর খ্যাতি এখন বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। রাখাইন অধ্যুষিত এই অঞ্চলটি দক্ষিণে সাগরের বিস্তৃত জলরাশি, পূর্বে গঙ্গামতি সংরক্ষিত অরণ্য ও পশ্চিমে খাজুরার বনাঞ্চল দ্বারা ঘেরা এক মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এছাড়াও, এখানে বেড়ানোর জন্য আরো নানা আকর্ষণীয় স্থান রয়েছে। কুয়াকাটার দর্শনীয় স্থানগুলো হল: কুয়াকাটার কুয়া, জিরো পয়েন্ট, শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, মিশ্রিপাড়া সীমা বৌদ্ধ বিহার, নৌকা জাদুঘর, আদিবাসী রাখাইন পাড়া, কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যান, ইকোপার্ক, গঙ্গামতির চর, সাগরের বুক চিরে জেগে ওঠা চর বিজয়, শুঁটকিপল্লি, লেম্বুর বন, তিন নদীর মোহনা, ফাতরার বন, লাল কাঁকড়ার চর, পানি জাদুঘরসহ অন্যান্য দর্শনীয় স্থান। কুয়াকাটার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো তার সৈকত। সৈকতে দাঁড়িয়ে দক্ষিণে যতটুকু চোখ যায়, ততটুকু নীল আকাশ দেখা যায়।
কুয়াকাটার কুয়া: 'কুয়া' শব্দটি এসেছে 'কূপ' থেকে। ধারণা করা হয়, বার্মা থেকে বিতাড়িত হয়ে আরাকানিরা এই অঞ্চলে এসে বসবাস শুরু করে। তখন এখানকার পানির সংকট মোকাবিলায় তারা প্রচুর কুয়া বা কূপ খনন করেছিল, সেজন্য এই অঞ্চলটির নাম হয় কুয়াকাটা।
কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্ট: এখানে ফয়েজ মিয়ার নারিকেল বাগান এবং মসজিদ-মন্দির দেখা যাবে। জিরো পয়েন্টে দাঁড়িয়ে সমুদ্রের গর্জন শুনতে পাবেন।
শুঁটকিপল্লি: সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে বিচে যেতে পারবেন শুঁটকিপল্লিতে, যেখানে জেলেরা শুঁটকি তৈরির প্রক্রিয়া দেখাতে পারবেন।
লেম্বুর বন ও তিন নদীর মোহনা: এখান থেকে সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখার সুযোগ পাবেন। সন্ধ্যায় লেম্বুর বনের পাখির কিচিরমিচির শব্দে মন ভরিয়ে তুলবে। লেম্বুর বনের এক কিলোমিটার পশ্চিমে তিন নদীর মোহনা অবস্থিত। ফাতরার বন: সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে ট্রলার দিয়ে ফাতরার বনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা যায়, যেখানে বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখি এবং কেওড়া, গেওয়া, সুন্দরী, গরান, বাইন ও গোলপাতার গাছ দেখা যাবে।
চর বিজয়: এটি একটি ছোট দ্বীপ যা গভীর সমুদ্রে জেগে উঠেছে। ইংরেজি নাম ভিক্টোরিয়া আইল্যান্ড, আয়তন প্রায় ৫ হাজার একর, দৈর্ঘ্য প্রায় ১০ কিলোমিটার। স্থানীয়দের কাছে ‘হাইরের চর’ নামে পরিচিত।
লাল কাঁকড়ার চর: একটি সুন্দর দ্বীপ, যেখানে সৈকতজুড়ে লাল কাঁকড়ার ছোটাছুটি দেখা যায়। এ স্থানটি ভ্রমণপ্রিয় প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক অপরূপ সৌন্দর্য।
চর গঙ্গামতি: এটি কুয়াকাটা সৈকত থেকে ৭ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। সূর্যোদয়ের দৃশ্য দেখার জন্য এটি একটি জনপ্রিয় স্থান। কুয়াকাটার জাতীয় উদ্যান ও ঝাউবন: সৈকতের কাছে অবস্থিত এই উদ্যানটি বিশাল এলাকা জুড়ে ঝাউগাছ দিয়ে আবৃত, যা স্থানীয়রা ঝাউবন নামে চেনে।
ফ্রাই মার্কেট: দুপুরের পরপরই এখানে পর্যটকদের ভিড় জমে ওঠে। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ বারবিকিউ ও ফ্রাই দেখে খেতে পারবেন। শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার: এটি কুয়াকাটার একটি প্রাচীন নিদর্শন এবং রাখাইন সম্প্রদায়ের উপাসনালয়, যেখানে ৩৭ মণ ওজনের একটি প্রাচীন বৌদ্ধমূর্তি রাখা রয়েছে।
কীভাবে যাবেন কুয়াকাটায়: ঢাকার সদরঘাট থেকে লঞ্চে পটুয়াখালী অথবা কলাপাড়া যেতে হবে। সেখান থেকে বাসে কুয়াকাটায় পৌঁছাতে হবে। এছাড়া ঢাকার গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মিরপুরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে সরাসরি কুয়াকাটায় বাস সার্ভিস পাওয়া যায়।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta