গণহত্যার জন্য আওয়ামী লীগকে বিচারের মুখোমুখি করা হোক : সালাউদ্দিন আহমেদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডগুলোর জন্য আওয়ামী লীগকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচারের আওতায় আনা উচিত। বিএনপি দেশের প্রচলিত আইন সংশোধন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের লোকবল বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে।
শনিবার (৫ এপ্রিল) রাজধানী গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'আমরা আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনার দাবি করেছি এবং তা লিখিতভাবে সরকারের কাছে পেশ করেছি। জনগণের সামনে প্রস্তাব আকারে বিষয়টি তুলে ধরেছি। আমরা চাই, আওয়ামী লীগকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচার করা হোক। এজন্য সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইন সংশোধন করা যেতে পারে। বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যদি আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হয়, তবে জনগণ তা মেনে নেবে।'
তিনি বলেন, 'আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলা করা হয়েছে, বিশেষ করে শেখ হাসিনাসহ তার মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে, সেই মামলাগুলোর অগ্রগতি সেভাবে দৃশ্যমান নয়। জাতি আশা করে, এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। এজন্য ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা ও লোকবল বাড়ানো দরকার এবং বিভাগীয় পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল স্থাপন সম্ভব কি না, তা খতিয়ে দেখা উচিত।'
নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির নেতা বলেন, 'আমরা যেমন সংস্কারের জন্য, বিচার চেয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বলছি, তেমনি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠান আমাদেরও প্রধান বিষয়। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, নির্বাচন তারিখ বারবার পরিবর্তন হচ্ছে। বিভিন্ন পক্ষ নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে। আমাদের দাবি, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন রোড ম্যাপ দ্রুত ঘোষণা করবেন, যাতে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই দাবিতে হেফাজতে ইসলামও একমত হয়েছে।'
বৈঠক সংক্রান্তে তিনি বলেন, '২০১৩ সালে মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের ওপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছিল, তার সঠিক সংখ্যা এখনও নিরূপণ হয়নি। সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে আদালতে মামলা করা হয়েছে। হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি ও বিচার চাওয়া হয়েছে, এবং আমরাও তাদের সঙ্গে একমত।'
তিনি আরও বলেন, 'বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছিল, যাদের জেলে ফেলে নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সমস্ত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার দাবি করি।'
বৈঠকটি শনিবার রাত সোয়া ৮টায় শুরু হয়ে, রাত পৌনে ১০টায় শেষ হয়। বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান, এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, যেমন ড. আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta