দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সহজলভ্য ও মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্য নিয়ে গ্রামীণ ডিজিটাল হেলথকেয়ার সলিউশন্স (GDHS) এবং তুর্কিস কো-অপারেশন অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশন এজেন্সি (TIKA) যৌথভাবে ‘সুখী সেবা কেন্দ্র’ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।

আজ সকাল ১০টায় টঙ্গীর তনিমা মেডিসিন হাউসে TIKA এর সহযোগিতায় প্রথম ‘সুখী সেবা কেন্দ্র’ উদ্বোধন করা হয়েছে।

বর্তমানে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত নানা সমস্যার সম্মুখীন। দেশে ৬,৫৭৯ জন রোগীর জন্য রয়েছে একজন চিকিৎসক এবং ২৩,০০০ জনের জন্য একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। গ্রামীণ এলাকায় ৬১% জনগণ বসবাস করলেও, সেখানে স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত কর্মী মাত্র ২৫%। এছাড়া, অসংক্রামক রোগে (NCDs) মৃত্যুর হার ৬০% বৃদ্ধি পেয়ে এখন মোট মৃত্যুর ৭০%-এ পৌঁছেছে।

স্বাস্থ্যসেবার ব্যয়ও বাড়ছে—২০০০ সালে যেখানে পরিবারের ১৫% আয় থেকে ১০% স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় হতো, ২০১৬ সালে তা ২৪%-এ গিয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে GDHS ডিজিটাল প্রযুক্তি ও বিশ্বমানের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা আরও সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ী করতে কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা প্ল্যাটফর্ম ‘সুখী’ চালু করা হয়েছে। ‘স্বাস্থ্যসেবার সব সমাধান’ স্লোগানে সুখী সর্বোচ্চ মানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

গ্রামীণ জনগণের জন্য মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করতে ‘সুখী সেবা কেন্দ্র’ চালু করা হয়েছে। এই কেন্দ্রগুলোতে ২০ টাকায় চিকিৎসকের পরামর্শ, বিশিষ্ট চিকিৎসকদের সেবা, প্রয়োজনীয় ওষুধ, ডায়াগনস্টিক, সার্জারি রেফারেল এবং বিদেশে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ পাওয়া যাবে। প্রাথমিকভাবে ৫,০০০ ফার্মেসির সঙ্গে সুখী সেবা কেন্দ্রের অংশীদারিত্ব গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে, যা ভবিষ্যতে ৫০,০০০ ফার্মেসিতে বিস্তৃত হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণ ডিজিটাল হেলথকেয়ার সলিউশন্স-এর CEO ড. আহমেদ আরমান সিদ্দিকী, CTO মোহাম্মদ সোলায়মান রাসেল, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের পার্টনারশিপ লিড ডা. ফাহরীন হান্নান।

তুর্কিস কো-অপারেশন অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশন এজেন্সি (TIKA)-এর পরিচালক সেভকি মারথ বারিস, মুহাম্মদ আলী আর্মগান, সহকারী সমন্বয়ক মনজুর এলাহী এবং অন্যরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

সুখী সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে আধুনিক ও সহজলভ্য সেবার যাত্রা শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে এই উদ্যোগ বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মুনতাসির/সাএ