সিট ফাঁকা থাকার কথা শুনে হেলিকপ্টারে মাগুরা গেছি: সারজিস
শিশু আছিয়ার জানাজায় অংশ নিতে হেলিকপ্টারে করে মাগুরায় যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহসহ কয়েকজন নেতা।
মাগুরায় পৌঁছানোর পর পুলিশের হেলিকপ্টার থেকে তাদের নামার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এটি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে সারজিস বলেন, সেনাবাহিনী ও র্যাব থেকে (আছিয়ার) পরিবারের জন্য নির্ধারিত হেলিকপ্টারে কয়েকটি সিট ফাঁকা থাকার তথ্য পেয়ে তিনি মাগুরায় যান এবং জানাজা শেষে ঢাকায় ফিরে আসেন।
শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান।
ফেসবুক পোস্টে সারজিস লেখেন, ‘আসুন, কিছু কথা সোজাসাপ্টা বলি। আপনারা যে ভিডিওটি নিয়ে কথা বলছেন, সেটি নিয়ে। একটি নির্মম ঘটনা ঘটেছে। আমি প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত আসামি গ্রেপ্তারের জন্য বলেছি। এরপর আদালত ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করার নির্দেশনা দেয়। আমি মনে করি, এই সময়সীমা অনেক বেশি, এটি ১-২ মাসের মধ্যে শেষ করা উচিত। না হলে ঘটনার গুরুত্ব কমে যায় এবং অপরাধ দমনে প্রভাব পড়ে না।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আমি একা কিছু বলিনি, বা শুধুমাত্র আমার কথায় গ্রেপ্তার হয়েছে বা আইন পরিবর্তন হয়েছে, তা নয়। তবে আমি যা সঠিক মনে করেছি, সেটাই করেছি। এরপর যখন তাকে ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়, আমি সেখানেও গিয়েছি। কিন্তু আইসিইউতে ইনফেকশনের ঝুঁকি থাকায় সেখানে প্রবেশ করিনি, বাইরে থেকে খোঁজ নিয়েছি। ছবি প্রকাশ করিনি।’
সারজিস বলেন, ‘পরবর্তীতে যখন জরুরি অবস্থায় সিএমএইচ-এ নেওয়া হয়, তখনও আমরা কয়েকজন গিয়েছিলাম। সেখানে আইসিইউতে থাকার কারণে সরাসরি দেখা করা নিষেধ ছিল, তাই ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে ফিরে আসি। এরপরও সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু লিখিনি। তবে শেষ পর্যায়ে যখন আছিয়া মারা যায়, তখন আমি সিএমএইচে ছুটে যাই এবং জানতে পারি যে তার পরিবারের জন্য নির্ধারিত হেলিকপ্টারে কয়েকটি আসন খালি রয়েছে। তখনই মাগুরায় গিয়ে জানাজায় অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই এবং জানাজা শেষে ঢাকায় ফিরে আসি।’
তিনি বলেন, ‘আমি যা করেছি, তার শেষ অংশটুকুই সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়েছি, কিন্তু মিডিয়া ও কিছু মানুষ সেটিকে পুরো ঘটনা ধরে বিচার করতে শুরু করেছে। এটা কি মানা যায়? আমরা যদি কিছু প্রকাশ করি, তখন বলা হয় প্রচারের জন্য করছি। আবার কিছু না দিলে বলা হয় কিছু করিনি। এই দ্বৈত মানসিকতা কবে শেষ হবে?’
সারজিস লেখেন, ‘আছিয়ার জানাজা সন্ধ্যা ৭টায় ছিল। আমরা পৌঁছাই সাড়ে ৫টায়। অপেক্ষার সময় কয়েক মিনিট ফোনের নোটিফিকেশন চেক করেছি। তখন কেউ ছবি তুলে সেটি অনলাইনে এমনভাবে প্রকাশ করল যেন আমরা পুরো সময় বসে ফোন দেখছিলাম। এটি কি ন্যায়সঙ্গত?’
তিনি আরও লেখেন, ‘যারা এসব ছবি ও তথ্য বিকৃত করে উপস্থাপন করেন, তাদের অনুরোধ করব—পেশাদারিত্ব বজায় রাখুন। আমরা মাঠে কাজ করি, বিশ্লেষণ করে সময় নষ্ট করি না। যারা আমাদের সমালোচনা করেন, অনুগ্রহ করে নিজেরা ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন, আমরা তা অনুসরণ করব।’
বাঁধন/সিইচা/সাএ
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta