মুরগি ও ডিমের দাম কমেছে, চাল ও সবজির মূল্য বাড়ল
ঈদ শেষ হলেও নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তির ছোঁয়া দেখা যায়নি। বিশেষ করে চাল ও সবজির দাম উর্ধ্বগতিতে বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ দৈনন্দিন খরচ মেটাতে কষ্টে পড়েছে। বোরো মৌসুমের মাঝেও চালের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি সবজির বাজারে অস্থিরতা জনজীবনে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে চাল ও সবজির দাম ক্রমবর্ধমান। প্রতি কেজি চালের দাম ২ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। ৫০ কেজির বস্তার দামও সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ার খবর এসেছে। চাল ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, মিল মালিকরা কোনো যৌক্তিক কারণ ব্যতিরেকে দাম বৃদ্ধি করছেন; যা সরবরাহ বা চাহিদার সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়।
বর্তমানে খুচরা বাজারে মোটা চাল (বিআর-২৮, পারিজা) ৫৮ থেকে ৬৫ টাকা, জিরাশাইল ৭৪ থেকে ৮০ টাকা, মিনিকেট ৭৬ থেকে ৮৪ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬ থেকে ৮৬ টাকা এবং পোলাও চাল ১১৬ থেকে ১১৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বর্ষার শুরুতে কিছু সবজি জমির পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে অনেক সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়েছে। বর্তমানে বরবটি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, পটল ও ঢ্যাঁড়স ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ও ঝিঙা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাকরোল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে ধনেপাতার দাম সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়ে এখন ৪০০ টাকা প্রতি কেজি, যা এক সপ্তাহে ১৫০ টাকা বেড়েছে।
যদিও অধিকাংশ সবজির দাম বাড়ছে, তবুও যাত্রাবাড়ী, চিটাগাং রোড ও আশেপাশের কিছু এলাকায় ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে কিছু সবজি পাওয়া যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
ঈদের পর হালকা খাদ্যের চাহিদা বাড়ায় মুরগি ও ডিমের বাজারে কিছুটা স্বস্তি এসেছে। দাম কিছুটা কমে যাওয়ায় এখন আগের তুলনায় অনেকটাই সাশ্রয়ী হয়েছে। ব্রয়লার মুরগির দাম ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, সোনালি ২২৫ থেকে ২৩৫ টাকা, লেয়ার ২৩৫ থেকে ২৪০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ডিমের পাইকারি দাম ডজনপ্রতি ১১৮ থেকে ১২০ টাকা এবং খুচরায় ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
মাছের বাজারেও কিছুটা স্থিতিশীলতা রয়েছে। রুই, কাতল, পাবদা, তেলাপিয়া সহ চাষের মাছের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক থাকলেও দেশি মাছ এখনও কম পাওয়া যায়। চাষের রুই ও কাতল ৩২০ থেকে ৩৬০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৪০ টাকা এবং পাঙাশ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দেশি মাছের মধ্যে ইলিশ ২ হাজার টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, শিং ও টেংরা ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং দেশি শিং ও কৈ ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দেশি পেঁয়াজের দাম এখনও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে (৫০ থেকে ৬০ টাকা প্রতি কেজি), তবে সরবরাহ সংকট ও চাহিদা বৃদ্ধির কারণে আদা ও রসুনের দাম বাড়ছে। আদার দাম ১২০ থেকে ১৮০ টাকা এবং রসুন ১১০ থেকে ১৪০ টাকা প্রতি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা অভিযোগ করছেন, বাজারে চাল ও সবজির দাম বেড়েছে অথচ এর পেছনে কোনো স্পষ্ট কারণ নেই। নিয়মিত বাজার মনিটরিং না থাকায় অসাধু ব্যবসায়ীরা এ সুযোগ নিচ্ছেন বলে তাদের ধারণা। দ্রুত বাজার তদারকি জোরদার করে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের দাবি তুলেছেন সাধারণ মানুষ।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta