১০০ ডলার পাঠালে দেশে ৩০৭ টাকা বেশি পাবেন
আপনি কি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন? সেখানে আয় করছেন অথবা সরকারি ভাতা পাচ্ছেন? বৈধভাবে, অর্থাৎ বাংলাদেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলার পাঠালেই সরকার আপনাকে আর্থিক প্রণোদনা দিচ্ছে। ১০০ ডলার পাঠালে আপনি পাচ্ছেন আড়াই ডলার প্রণোদনা।
ফলে, প্রবাসী কোনো বাংলাদেশি ১০০ ডলার পাঠালে দেশে তার পরিবার পাচ্ছে ১২ হাজার ৩০০ টাকা (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা হিসেবে)। এর সঙ্গে সরকার ৩০৭ টাকা ৫০ পয়সা আরও যোগ করছে।
কীভাবে পাঠাবেন
আপনি যে দেশেরই নাগরিক না কেন, সেখানকার মুদ্রায় আয় পাঠালে তা ডলার হিসেবে দেশে চলে আসবে। ব্যাংকগুলো তা বাংলাদেশি টাকায় বিতরণ করবে। যদি কোনো প্রবাসী ব্যাংকিং চ্যানেল ছাড়া অন্য কোনো মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠান, তবে তিনি প্রণোদনা পাবেন না। ফলে, বৈধ পথে প্রবাসী আয় দিন দিন বাড়ছে। প্রণোদনা পেতে আপনাকে অবশ্যই ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে ডলারের দামও ভালো।
বাংলাদেশে বিভিন্ন উপায়ে প্রবাসী আয়ের অর্থ গ্রহণ করা যায়। ব্যাংক হিসাব না থাকলেও অর্থ পাওয়া সম্ভব। যাঁদের ব্যাংক হিসাব রয়েছে, তাঁরা সেই হিসাবের মাধ্যমে টাকা নিতে পারেন। এছাড়া পিনের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও থেকেও অর্থ নেওয়া যায়। এই পিন কোডটি গোপন নম্বরের মতো এবং তা দিয়ে প্রবাসী আয়ের টাকাসহ সরকারের প্রণোদনাও পাওয়া যাবে। প্রতি ১০০ ডলারে বাড়তি ৩০৭ টাকা ৫০ পয়সা পাবেন।
এছাড়া, মোবাইল আর্থিক সেবা বিকাশ, রকেট, নগদ হিসাবেও সরাসরি প্রবাসী আয় গ্রহণ করা সম্ভব। এর জন্য কোনো ব্যাংক হিসাব প্রয়োজন হয় না। সাধারণত বিদেশ থেকে পাঠানো অর্থ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রাপকের কাছে পৌঁছে যায়। ফলে, এখন প্রবাসী আয় গ্রহণ আগের চেয়ে সহজ হয়ে উঠেছে।
বিদেশ থেকে প্রবাসীরা প্রায় এক বছর ধরে বৈধ পথে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি পরিমাণে প্রবাসী আয় পাঠাচ্ছেন। মূলত অর্থ পাচার কমে যাওয়ার এবং বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো সহজ হওয়ায় প্রবাসীরা বৈধ পথে আয় পাঠাতে আগ্রহী হয়েছেন।
রেমিট্যান্স কত এল
চলতি জুনের প্রথম তিন সপ্তাহে দেশে ১৯৮ কোটি মার্কিন ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। এর মধ্যে শেষ তিন দিনে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ১২ কোটি ৭০ লাখ ডলার। গত বছরের জুনের প্রথম তিন সপ্তাহে এসেছিল ১৯১ কোটি ডলারের প্রবাসী আয়। এই হিসাবে, চলতি মাসের প্রথম ২১ দিনে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৪ শতাংশ।
প্রবাসী আয় বৃদ্ধির কারণে ব্যাংকগুলোর মধ্যে ডলারের সংকট অনেকটা কমে গেছে বলে ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা আরও বলেন, ডলারের দাম নিয়ে অস্থিরতাও অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ব্যাংকগুলো এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত ১২৩ টাকার মধ্যেই প্রবাসী আয় কিনছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ২১ জুন পর্যন্ত ২ হাজার ৯৫০ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ২ হাজার ৩২৯ কোটি ডলার। এর মানে, চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত প্রবাসী আয় বেড়েছে ২৬.৭ শতাংশ।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta