সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল স্থাপনের নির্দেশ

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল স্থাপন করে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি’ শীর্ষক এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এ নির্দেশনা দেন।

বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তারা জানালেন, আন্তর্জাতিক রিনিউয়েবল এনার্জি এজেন্সির ২০২৪ সালের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ও লক্ষ্য পূরণে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে। ভারতে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ২৪ শতাংশ, পাকিস্তানে ১৭.১৬ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কায় ৩৯.৭ শতাংশ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদিত হলেও বাংলাদেশে এটি মাত্র ৫.৬ শতাংশ।

নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা ২০২৫ অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ২০ শতাংশ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন লক্ষ্য রাখা হয়েছে। এই লক্ষ্য অর্জনে ইতোমধ্যে ৫ হাজার ২৩৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৫৫টি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রের টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যা ২০২৮ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে জানা গেছে।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি’ প্রণয়নের নির্দেশ দেন। তিনি সকল সরকারি ভবন, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা এবং সরকারি হাসপাতালের ছাদে রুফটপ সোলার সিস্টেম স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকারি ভবনে সোলার প্যানেল স্থাপন বেসরকারি উদ্যোগে করা যায় কি না, সে বিষয়ে ভাবনা নিন। যারা এই কাজ করবে, তারা নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থে এর রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালনা করবে। সরকারের পক্ষ থেকে শুধুমাত্র ছাদ সরবরাহ করা হবে, বাকিটা তাদের দায়িত্ব।

তিনি আরও বলেন, যারা ইতোমধ্যে রুফটপ সোলার প্যানেল স্থাপন করেছে, তাদের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করতে হবে। কী ধরনের সমস্যা তারা মুখোমুখি হয়েছে, এবং সেগুলোর সমাধানে কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, তা দেখতে হবে।

এ প্রক্রিয়ায় সরকারি স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসাগুলোর বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য কোনো বিল দিতে হবে না, এবং সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত ছাদের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো ভাড়া পাবে।

বৈঠকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: বাসস