সারা দিনে মাত্র ৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন মনপুরাবাসী
মনপুরাবাসীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সন্ধ্যার পর শুধুমাত্র ৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পান। সাড়ে তিন শ কিলোমিটার আয়তনের দ্বীপ উপজেলা মনপুরায় প্রায় ৪ বছর ধরে বিদ্যুৎ সংকট চলমান।
প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে মাত্র তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। সোলার, আইপিএস এবং জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য স্থানীয়দের অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। মনপুরায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো)।
ওজোপাডিকো জানিয়েছে, সাবমেরিন ক্যাবল দিয়ে মনপুরাকে জাতীয় গ্রিডের সাথে যুক্ত করার কাজ চলছে এবং পাশাপাশি সোলার প্ল্যান্ট স্থাপন করা হচ্ছে। এর পরেই বিদ্যুৎ সংকট দূর হবে।
এদিকে, সোলার, আইপিএস ও ছোট জেনারেটর ব্যবহার করে দ্বীপের শিক্ষা ও চিকিৎসা খাত চলছে। স্থানীয়রা বলছেন, দিনে বিদ্যুৎ পাওয়া যায় না। রাতে কেবল দুই থেকে তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ আসে, যা দিয়ে পড়াশোনা, পানি তোলা, মোবাইল চার্জ করা বা টিভি ফ্রিজ চালানো সম্ভব হচ্ছে না।
বিদ্যুৎ অভাবে স্বাস্থ্যসেবা তীব্রভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। হাসপাতালে সৌর বিদ্যুৎ এবং জেনারেটর ব্যবস্থা রয়েছে, তবে ২-১ ঘণ্টার বিদ্যুৎ সরবরাহ একেবারেই পর্যাপ্ত নয়, ফলে রোগী সেবা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
কম ভোল্টেজের কারণে ফ্যান, যন্ত্রপাতি ও কম্পিউটার যথাযথভাবে চলতে পারছে না। ল্যাব থাকা সত্ত্বেও বিদ্যুৎ না থাকায় বিভিন্ন রোগের পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। দিনে বিদ্যুৎ কখনোই পাওয়া যায় না মনপুরাবাসীর জন্য।
ওজোপাডিকো জানায়, চারটি জেনারেটরের মধ্যে দুটি নষ্ট হওয়ায় মনপুরার বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা অর্ধেকে নেমে এসেছে। ১৫ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে বর্তমানে উৎপাদন হচ্ছে ৪২০ কিলোওয়াট। তবে, উপজেলা সদর এলাকায় ৩ মেগাওয়াট সোলার প্ল্যান্ট নির্মাণের কাজ চলছে এবং চরফ্যাশন থেকে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে মনপুরাকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করলে সংকট অনেকটা সমাধান হবে।
ওজোপাডিকোর আবাসিক প্রকৌশলী কে এম ফরিদুল ইসলাম জানান, সোলার প্ল্যান্ট নির্মাণ শেষ হলে আশা করা যায়, পুরো মনপুরা বিদ্যুৎ পাবে। এছাড়া, সাবমেরিন ক্যাবল প্রকল্পের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত হওয়ার কাজ চলমান।
মনপুরার রামনেওয়াজ ও বাংলাবাজার এলাকায় দুটি বেসরকারি সোলার প্ল্যান্ট থেকে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে। এর জন্য ১,১৯৯ গ্রাহককে প্রতি ইউনিট ৩৫ টাকা হারে বিল দিতে হচ্ছে।
জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত হলে, বিদ্যুৎ খরচ কমে গিয়ে প্রতি ইউনিট ৬ থেকে ৭ টাকা হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta