বিএনপির বড় ঘোষণা
স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের পর, দেশের রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কর্মসূচি নির্বিঘ্নে পালন করতে সক্ষম হয়েছে। এবার দীর্ঘ ১৬ বছর পর, স্বাধীন পরিবেশে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করবে বিএনপি। দলটি বড় পরিসরে দিনটি উদযাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে।
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দেশীয় সংস্কৃতি তুলে ধরতে বিএনপি নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং কর্মসূচি আয়োজন করবে। বৈশাখী যাত্রা, র্যালি এবং মেলা ছাড়াও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
এই কর্মসূচি দেশের মহানগর, জেলা এবং উপজেলাগুলোতে পালিত হবে। গত সোমবার রাতে, রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এছাড়া, নির্বাচন নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপি আবারও সাক্ষাৎ করবে। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফেরার পরপরই এ সাক্ষাতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বরতা এবং গণহত্যা নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি। তারা দ্রুত এ নৃশংসতা বন্ধের দাবি জানিয়েছে এবং খুব শিগগিরই ঢাকায় বড় ধরনের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে বলে জানিয়েছে দলটি। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল জানান, পহেলা বৈশাখে সারা দেশে দলীয় কর্মসূচি থাকবে। এর মধ্যে জেলা ও উপজেলায় বৈশাখী যাত্রা বা র্যালি হবে। ইউনিয়ন পর্যায়েও এটি আয়োজন সম্ভব হলে করা হবে। এছাড়া, পান্তা আয়োজন, লোকজ গান, বৈশাখী মেলা, হাডুডু খেলা সহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে।
তবে, ১৫ এপ্রিল এসএসসি পরীক্ষা থাকায়, পহেলা বৈশাখের সব কর্মসূচি সন্ধ্যার আগেই শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরদিন ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যার পর এবং ১৬ এপ্রিলেও নানা কর্মসূচি পালন করা হবে।
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ঈদুল ফিতরের পর এটি ছিল দলের নীতিনির্ধারকদের প্রথম বৈঠক।
সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ নিয়ে বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দাবী জানিয়ে আসছিল এবং তারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চায়। সাক্ষাতের পর, দলটি নির্বাচনি রোডম্যাপ এবং পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে। বৈঠকে নির্বাচনি রোডম্যাপ এবং সংস্কারের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিএনপি সংস্কারের পক্ষে এবং নির্বাচনের সাথে সম্পর্কিত সব সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দাবী জানিয়েছে।
বিএনপি মনে করে, সরকার নির্বাচনের বিষয়গুলো এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে করতে পারে এবং বাকি সংস্কার রাজনৈতিক ঐকমত্যের মাধ্যমে পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ করবে।
তবে, সরকারের তরফ থেকে নির্বাচনের যে সময়সীমা দেওয়া হয়েছে, বিএনপি সে বিষয়ে এখনো আশ্বস্ত নয়। দলটির শঙ্কা রয়েছে, নির্বাচনের সময় পিছিয়ে যেতে পারে।
সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, কিন্তু বিএনপি মনে করে এটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ নয়।
জানা গেছে, বিএনপি নির্বাচনের সংশয় এবং দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করবে।
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান (অনলাইনে), নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (অনলাইনে), আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু (অনলাইনে), মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন (অনলাইনে)।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta