সংবিধান লঙ্ঘন করে আদিবাসী আয়োজনে রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান; পিসিসিপি`র প্রতিবাদ
দেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে আদিবাসী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার। বুধবার (৯ এপ্রিল) ২০২৫ সকালে রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে শুরু হওয়া চারদিনব্যাপী বিজু উৎসবের উদ্বোধনী আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উদ্বোধন করেন তিনি।
তাঁর এই অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে রাষ্ট্রীয়ভাবে বলা হয় পার্বত্য অঞ্চলে আদিবাসী নেই, সেখানে একজন সরকারি পদে থাকা ব্যক্তি কীভাবে আদিবাসী অনুষ্ঠানে যোগ দেন—এ নিয়ে জনমনে অসন্তোষ ছড়িয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকায় সংবিধান পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখা, যারা সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে এর প্রতিবাদ করে।
পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি আলমগীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো. খলিলুর রহমান তাদের বিবৃতিতে বলেন, বিজু ও সাংগ্রাই উৎসবের ব্যানারে লেখা হয়েছিল 'আদিবাসী জুম্ম জাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে যুক্ত হও'—এই ধরনের রাজনৈতিক স্লোগান কেন উৎসবের মঞ্চে থাকবে? উৎসবের সঙ্গে আন্দোলনের সংমিশ্রণ কেন করা হচ্ছে? আদিবাসী শব্দটি অসাংবিধানিক হওয়ায় এর ব্যবহার নিয়েও তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, কিছু সন্ত্রাসী সংগঠন এসব উৎসবকে ব্যবহার করে পার্বত্য অঞ্চলে অস্থিরতা ছড়ানোর চেষ্টায় আছে, এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তাতে সহায়তা করছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানে আদিবাসী শব্দের কোনও স্থান নেই। পিসিসিপি দাবি করে, ১৭২৭ থেকে ১৭৪০ সালের মধ্যে যাঁরা এখানে এসেছেন, তারা আদিবাসী হিসেবে গণ্য হন না। ১৯৯৭ সালের পার্বত্য শান্তি চুক্তির (খ) ধারার ১ নম্বর উপধারায় 'উপজাতি' শব্দের উল্লেখ থাকলেও 'আদিবাসী' শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি। বাঙালি এবং উপজাতি—সবাই বাংলাদেশি হিসেবে পরিচিত।
সংবিধান অনুযায়ী দেশে আদিবাসী বলে কিছু নেই এবং চুক্তিতেও এর স্বীকৃতি নেই—এই অবস্থায় যারা আদিবাসী শব্দের ব্যবহার করছে, তারা রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমে লিপ্ত। পিসিসিপি এসব কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
আরএস
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta