‘ফসলের জন্য মাঠ তৈরি করেছে বিএনপি, ধান কি অন্যের বাড়িতে যাবে’
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেছেন, ফসল ফলানোর জন্য বিএনপি ক্ষেত তৈরি করেছে, বীজ বপন করেছি আমরা, ফসলের যত্ন নিয়েছি আমরা, এবং রোগবালাই নিয়ন্ত্রণ করেছি আমরা। এখন কি অন্যরা ফসল ঘরে তুলবে? এটা হতে পারে না। রক্তে ফলানো এই ফসল পাওয়ার অধিকার শুধুমাত্র বিএনপিরই। জনগণ দেশের প্রকৃত মালিক। ইউনূস সাহেবরা শুধু পাহারাদার। কাজেই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করুন। দেশের মালিকদের সিদ্ধান্ত নিতে দিন, তারা ঠিক করবেন দেশের পাহারাদার কে হবে এবং কোন দলের হবে।
শনিবার কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম পাইলট স্কুল মাঠে উপজেলা বিএনপির আয়োজনে ইদ পুনর্মিলনী ও জনসভায় তিনি এসব মন্তব্য করেন।
এ সময় ফজলুর রহমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, সাধারণত তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হয়। কিন্তু আপনারা আট মাস পেরিয়ে ফেলেছেন। বিভিন্ন অজুহাতে, সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন বিলম্বিত করছেন। কখনো বলেন ডিসেম্বরে, কখনো বলেন জুনে। আমরা হাসিনা সরকারের বিদায় চেয়েছি, এবং নতুন সরকার বা প্রধানমন্ত্রী চাই। তাই দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। দেশ দীর্ঘদিন অনির্বাচিতদের হাতে থাকতে পারে না। নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মালিকরা তাদের পছন্দের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চান। এইটাই আমাদের প্রধান দাবি।
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আপনি যদি পাল্লা (দাঁড়িপাল্লা) মার্কা, ডালিম মার্কা, ইসলামের নাম করে বা হেফাজত ও আহলে হাদিসের মাধ্যমে ভোট চান, তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই। যদি জনগণ আপনাকে ভোট দেয় এবং ইসলামের কথা শুনে ভোট দেয়, তাহলে আপনিই দেশ চালান। আপনাকে আমি সম্মান করব। মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে শেখ হাসিনার কোনো সম্পর্ক নেই। হাসিনা এবং মুক্তিযুদ্ধ এক নয়। এখন হাসিনা ব্যর্থ হয়েছেন। তবে তার ব্যর্থতা মুক্তিযুদ্ধের নয়। একটি জাতির মুক্তিযুদ্ধ কখনো ব্যর্থ হতে পারে না। যারা এসব বলে, তারা মুক্তিযুদ্ধকে ছোট করতে চায়, অসম্মান করতে চায়।
ফজলুর রহমান আরো বলেন, এক সময় আমাদের দেশ ছিল পাকিস্তান। রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে। যেমনি মায়ের পেট থেকে শিশুর জন্ম হয়, তেমনি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ জন্ম নিয়েছে। এখন যদি কেউ বাংলাদেশ বা মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করে, তাহলে তারা মাকে অস্বীকার করার মতো। যে ছেলে মাকে অস্বীকার করে, সে ভালো ছেলে হতে পারে না। মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা মানে ভালো মানুষ না হওয়া। যদি কেউ মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করে, তাহলে আমি তাকে রাজাকার বলব। যারা মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করবে, আমি বলব, তাদের পূর্বপুরুষ আল-বদর ও দালাল ছিলেন। তাদের গালিগালাজ করলেও আমি মুক্তিযুদ্ধকে ছাড়ব না। কারণ লাখ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমরা এই স্বাধীনতা অর্জন করেছি।
অষ্টগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাঈদ আহমেদের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হেসেন মুকুল, বিএনপি নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান বাবু, অষ্টগ্রাম সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. দানা প্রমুখ।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta