ট্রাম্পের শুল্ক নীতির বিরুদ্ধে বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়া
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার দেশটির বাণিজ্যিক অংশীদারদের কাছ থেকে পণ্য আমদানিতে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। এই শুল্কের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা বেশিরভাগ পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি কিছু দেশের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা বিশ্ব বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
চীন
চীন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কের বিরুদ্ধে 'স্পষ্ট বিরোধিতা' জানিয়েছে এবং নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, মার্কিন শুল্ক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আইনের লঙ্ঘন এবং এতে চীনের বৈধ অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে। এই শুল্ক আরোপের ফলে চীনের ব্যবসায়ীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে ৫৪ শতাংশ শুল্ক দেবেন।
যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য মন্ত্রী জনাথন রেনল্ডস বলেন, যুক্তরাজ্য মার্কিন সঙ্গে একটি অর্থনৈতিক চুক্তি চূড়ান্ত করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে, যা ১০ শতাংশ শুল্ক কমাবে। তবে তিনি আরও বলেন, তাদের কাছে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নানা বিকল্প রয়েছে এবং প্রয়োজন হলে তারা তা গ্রহণ করবেন।
কানাডা
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেছেন, আমেরিকান শুল্ক ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম এবং অটোমোবাইল খাতে লাখ লাখ কানাডিয়ানের উপর প্রভাব ফেলবে। কানাডা পাল্টা ব্যবস্থা নিয়ে এই শুল্কের বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
ব্রাজিল
ব্রাজিলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তারা বাণিজ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কাছে যাবে।
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবেনিস বলেছেন, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই এবং এটি দুই দেশের সম্পর্কের বিরুদ্ধে যায়। এই সিদ্ধান্ত বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা বাড়াবে এবং আমেরিকান পরিবারগুলির ব্যয় বাড়াবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হ্যান ডাক-সু
দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে, বাণিজ্য সংকট মোকাবেলা করতে তাদের সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।
নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডের বাণিজ্যমন্ত্রী টড ম্যাকক্লে বলেন, তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে কাজ করবে এবং দেশের রফতানিকারকদের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।
স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ
স্পেন তার কোম্পানি এবং কর্মীদের সুরক্ষা দেবে এবং একটি উন্মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থার প্রতি তাদের অঙ্গীকার থাকবে।
সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন
সুইডেন চায় না বাণিজ্য বাধা বৃদ্ধি পাক এবং তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী।
সুইস প্রেসিডেন্ট কারিন কেলার-সাটার
সুইজারল্যান্ড আন্তর্জাতিক আইন এবং মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থায় আস্থা রাখবে এবং দ্রুত পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
আইরিশ প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন
আইরিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক সিদ্ধান্ত অত্যন্ত দুঃখজনক এবং এটি আইরিশ কর্মসংস্থান ও অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি
ইতালি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ এড়াতে কাজ করবে, যাতে বিশ্ব বাণিজ্যে দুর্বলতা না আসে।
কলম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরা সারাবিয়া
কলম্বিয়া জাতীয় শিল্প এবং রফতানিকারকদের সুরক্ষায় সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেবে।
সূত্র : রয়টার্স।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta