সোমবার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যায় নোয়াখালী হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা বাজারে বিএনপির হামলার প্রতিবাদে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্যোগে এবং পার্টির নেতা আব্দুল হান্নান মাসুদের উপর হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেলে হাতিয়া উপজেলা সদরের ধানসিড়ি রিসোর্টে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হাফিজুর রহমান জানান, এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ তার নিজ এলাকায় গত কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন পথসভা আয়োজন করছেন। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি জাহাজমারা বাজারে পথসভা পরিচালনা করছিলেন। এ সময় বিএনপির সন্ত্রাসীরা তাদের সভা বাধাগ্রস্ত করতে শুরু করে। পরবর্তীতে, এনসিপি নেতা এবং তার হাজার হাজার কর্মী সমর্থক যখন বাজার থেকে চলে যাচ্ছিলেন, তখন সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। এই আক্রমণে এনসিপির ৫৪ জন নেতাকর্মী আহত হয়, তাদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা গুরুতর এবং তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে এই হামলার তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করা হয়।

এছাড়াও, তিনি বলেন, বিএনপির চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে প্রশাসনের কাছে তাদের হস্তান্তর করতে হবে। পুলিশ প্রশাসনকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। সন্ত্রাসীরা পূর্বে ৫ই আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে নিহত লিটন উদ্দিনের ছোট ভাই আরিফ উদ্দিনের উপরও হামলা চালিয়েছিল। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য মো. ইউসুফ, তৌহিদুর রহমান, মো. ইসমাইল ও হামিদুর রহমান। পরে, এনসিপির নেতা কর্মীরা আজ সন্ধ্যায় উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল বের করার ঘোষণা দিয়েছেন।

হামলার পর থেকে হাতিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম আজমল হুদা নিশ্চিত করেন যে, রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত থানায় কোনো পক্ষ অভিযোগ দায়ের করেনি। তিনি আরও জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য যে, সোমবার আব্দুল হান্নান মাসুদ উপজেলায় জাহাজমারা ইউনিয়নে বিভিন্ন এলাকায় পথসভা ও উঠান বৈঠক করেছিলেন। ইফতারের আগে তিনি জাহাজমারা বাজারে একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল শুরু করেন। মিছিল চলাকালীন সময়ে কৃষকদল নেতার উপর হামলার প্রতিবাদে বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের মিছিল নিয়ে বের হয়। উভয় মিছিল মুখোমুখি হওয়ার পর উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং একপর্যায়ে বিএনপির মিছিল থেকে মাসুদের মিছিলে হামলা করা হয়। এতে দু’গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি হয় এবং মাসুদ তার দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন। এই অবস্থায় হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। একসময়, বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া করলে পালটা ধাওয়ার মধ্যে মাসুদের মাথায় ইট পড়ে তিনি আহত হন।