ডিসেম্বরে নির্বাচন, সংস্কারও চলবে
দেশ পরিবর্তনের জন্য সবার একসাথে কাজ করা প্রয়োজন
পুলিশকে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর নতুন সংকল্পের আহ্বান
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আমাদের হাতে খুব সীমিত সময় রয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে সাত মাস পার করেছি। ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে, তাই যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে।’
পুলিশের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা সংস্কারের কথা বলেছেন, কিন্তু সময় নষ্ট করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কাজ করতে হবে এবং তা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’
গতকাল সোমবার মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি এই কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশ পরিবর্তন করতে এককভাবে নয়, বরং সবাইকে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে এবং পুলিশ এই কাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার যা কিছু করতে চায়, তা শেষ পর্যন্ত পুলিশের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। তারা সব কাজ করে না, তবে তারা পরিবেশ তৈরি করে, যার মাধ্যমে কাজ করা সম্ভব হয়।’ তিনি জানান, ‘পুলিশের ভূমিকা আইন ও শৃঙ্খলা রক্ষা করা, যা ছাড়া অন্য কোনো কাজই সফল হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা পুলিশকে অবহেলা করেই দেশ গড়তে পারব না। তাদের সহায়তায় সমস্ত কার্যক্রম সম্ভব।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি একটি সাময়িক সমস্যা, যার সমাধান আমরা করতে চেষ্টা করব।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থান আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগ এনে দিয়েছে। আমরা যেন এ সুযোগ হারিয়ে না ফেলি। ভবিষ্যতেও যারা দায়িত্ব নেবেন, তারা যেন এই পথে চলতে পারেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ বাহিনী বড় ভূমিকা রাখতে পারে এই পথ সৃষ্টিতে। সারা বিশ্বের সমর্থন পেয়েছি আমরা, এবং তারা বিশ্বাস করে, বাংলাদেশ যদি পুনরুজ্জীবিত হয়, তা সকলের জন্যই ভালো হবে।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ গড়তে পুলিশ বাহিনীর গুরুত্ব অনেক। পুলিশের ভূমিকা এখানে অপরিহার্য। তারা আইন ও শৃঙ্খলা রক্ষা করলেই বাকি কাজগুলো সহজ হবে। তাদের কাজের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করব।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশকে এমনভাবে দেখাতে হবে, তারা খারাপ নয়, বরং আগে তাদের অবস্থান ছিল অন্ধকারে, এখন তারা নতুন পথ তৈরি করবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা পুলিশকে বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই, কারণ তারা আইনের পক্ষের মানুষ।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীর কাজ শুধু আইন মেনে চলা নয়, তাদের কাজ হবে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সহায়তা করা।’ তিনি যোগ করেন, ‘আইনের মধ্যে থেকেই আমরা জনগণের পাশে থাকব, তাদের পথ সুগম করব।’
নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যেহেতু নির্বাচন আসছে, বিভিন্ন চাপ থাকবে। পুলিশের উচিত আইনের মধ্যে থেকে দৃঢ় থাকা, যাতে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়।’
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গনি ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ ও রাজশাহী পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta