আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে শাজাহান খান যা বললেন
বড় ছেলে হাসিবুর রহমান খানের সাথে পাঁচ মাস ধরে দেখা হয়নি, এই কথা বলতে গিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে চোখের পানি ফেলেন সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, "আমার ছেলের সঙ্গে পাঁচ মাস আমার দেখা হয়নি। আমার প্রশ্ন, আমার ছেলে কী করেছে?"
সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে আদালত বাড্ডা থানার রফিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় শাজাহান খানের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এই সময় তিনি জানান যে, পাঁচ মাস ধরে তার ছেলের সাথে দেখা হয়নি এবং তখন কাঁদতে শুরু করেন।
এদিন সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে শাজাহান খানকে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয়। এ সময় তিনি আইনজীবীর সাথে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। সকাল ১০টা ৮ মিনিটে আদালত কার্যক্রম শুরু হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক শফিউল আলম তার ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিপক্ষে মিজানুর রহমান (বাদশা) রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।
রিমান্ড শুনানির সময় শাজাহান খান বলেন, "মাননীয় আদালত, আমাকে কিছু সময় দিন কথা বলার জন্য।" আদালতের অনুমতি নিয়ে তিনি বলেন, "পিপি সাহেব বলেছেন, আন্দোলনে পুলিশ গুলি করেছে। সে আদেশ তো পুলিশ কর্মকর্তারা দিতে পারেন, আমি তো গুলি চালানোর আদেশ দিতে পারি না। আমি জড়িত নই। কেন আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে? শুধু আমার বিরুদ্ধে না, আমার বড় ছেলে আসিবুর রহমানকেও আসামি করা হয়েছে। সে এখন জেলে।"
কাঁদতে কাঁদতে তিনি আরও বলেন, "আমার ছেলের সঙ্গে পাঁচ মাস আমার দেখা হয়নি। আমার প্রশ্ন, আমার ছেলে কি করেছে? আমি ঢাকায় থাকাকালে ছেলে মাদারীপুরে ছিল। আপনি এখনই চেক করতে পারেন। আর সিরাজুল ইসলাম কে?" এরপর বিচারক বলেন, "আপনার বিষয়ে আইনজীবী কথা বলেছেন," তবে শাজাহান খান তখনও দুই হাত জোর দিয়ে কথা বলার জন্য সময় চান।
তিনি আরও বলেন, "এটা একটু সময় দেন। উনারা (আইনজীবী) ভালোভাবে বিষয়টা বলতে পারেননি। চেয়ারম্যান ৬টা হত্যা মামলার আসামি। আমি তার পক্ষে ছিলাম না। তাই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই মামলা দিয়েছে।"
পরে আদালত তার চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। এই সময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে টিস্যু দিয়ে চোখ মুছতে থাকেন শাজাহান খান। পরবর্তীতে ১০টা ৪০ মিনিটে হেলমেট, বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও হাতকড়া পরিয়ে আদালত থেকে বের করা হয়।
হাজতখানায় নেওয়ার সময় তিনি বলেন, "পুলিশ বলছে কথা বলা নিষেধ। এটা গণতান্ত্রিক দেশ। আমি সারা জীবন কথা বলে এসেছি, কথা বলেই যাব।" পরে হাসতে হাসতে তিনি হেঁটে হাজতখানায় যান।
রার/সা.এ
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta