কক্সবাজারে জনতার পিটুনিতে ‘ডাকাত’ নিহত, তদন্তে নেমেছে পুলিশ
কক্সবাজারের রামুতে জনতার গণপিটুনিতে আবদুল মন্নান (৩৮) নামের এক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন। স্থানীয়দের দাবি, পালানোর সময় তাকে ধরে গণপিটুনি দেওয়া হয় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার গলা কেটে ফেলা হয়।
রোববার (২৯ জুন) সকাল ৯টার দিকে রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের কম্বনিয়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত মন্নান একই এলাকার মছন আলীর ছেলে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মন্নান দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় চুরি, ছিনতাই, গরু চুরি ও নারীদের উত্ত্যক্ত করাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এসব ঘটনায় থানায় একাধিকবার মৌখিক অভিযোগ জানানো হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল ইসলাম জানান, মন্নানের কারণে এলাকার মানুষ চরমভাবে ভোগান্তিতে ছিল। তার মৃত্যুর পর এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি নেমে এসেছে।
রামু থানার তদন্ত পরিদর্শক মোহাম্মদ ফরিদ জানান, সকালে এক যুবককে ছুরিকাঘাত করে পালাতে গেলে জনতা মন্নানকে ধরে গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলছে এবং মামলা প্রক্রিয়াধীন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী বলেন, মন্নানকে কয়েকবার পুলিশ আটক করলেও কিছুদিনের মধ্যেই ছাড়া পেয়ে এসে এলাকাবাসীকে ভয়ভীতি দেখাতো। তার ভয়ে অনেকেই এলাকা ছেড়ে গিয়েছিলেন।
কয়েকজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জানিয়েছেন, মন্নান প্রভাবশালী কয়েকজনের ছত্রছায়ায় থাকায় বারবার আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পার পেয়ে যেত। প্রশাসনের নির্লিপ্ত অবস্থান পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।
রামু সচেতন নাগরিক ফোরামের সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, অপরাধের যথাযথ বিচার না হওয়ায় জনগণ নিজেরাই প্রতিকার নিতেই বাধ্য হয়েছে। আগে ব্যবস্থা নিলে হয়তো এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানো যেত।
আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন আহমেদ সোহেল বলেন, গণপিটুনিতে কেউ নিহত হওয়া আইন ও মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন। বিচারহীনতা এমন পরিস্থিতির জন্ম দেয়, যা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য অশনিসংকেত।
রামু থানা পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তে কাজ অব্যাহত রয়েছে।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta