ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ, ক্রেতা সন্তুষ্ট হলেও হতাশ আড়তদাররা
চাঁদপুরে ইলিশের মূল্য সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে রাখতে মৎস্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি প্রেরণ করেছে জেলা প্রশাসন। এই উদ্যোগে ক্রেতারা খুশি হলেও, আড়ৎদার ও ব্যবসায়ীরা হতাশ।
জেলা প্রশাসনের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ইলিশ উৎপাদনে তেমন কোনো খরচ নেই, খাওয়ার জন্য আলাদা কিছু দিতে হয় না, ওষুধ বা বিশেষ যত্নের প্রয়োজনও নেই। প্রকৃতিগতভাবে ইলিশ মাছ উৎপন্ন হয়। তাহলে দাম এত বেশি হওয়ার কারণ কী? এ পরিস্থিতিতে ক্রেতাদের স্বার্থ রক্ষার্থে ইলিশের দাম নির্ধারণের আবেদন জানানো হয়েছে।
চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে উৎপাদিত ইলিশের স্বাদ এতটাই ভালো যে, ২০১৭ সালে সরকার “ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর” নামে একটি ব্র্যান্ডিং শুরু করেছিল। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই ব্র্যান্ডিংকে ব্যবহার করে ইলিশের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন, যা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
ব্যবসায়ী ইউসুফ বন্দুকশী ও সম্রাট বেপারী বলেছেন, ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ। চাঁদপুর ছাড়াও বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ে, কিন্তু চাঁদপুরের ইলিশের স্বাদ ও দাম ভিন্ন। জেলা প্রশাসকের উদ্যোগ ভালো হলেও, ব্যবসায়ীরা কিছুটা চিন্তিত, কারণ ইলিশ পচনশীল এবং কাঁচামাল হওয়ায় দাম প্রতিদিনের বাজার পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে।
স্থানীয় ক্রেতা দেলোয়ার হোসেন ও জসিমউদ্দিন মাতাব্বর জানিয়েছেন, ইলিশ প্রাকৃতিকভাবে বড় হয়, অথচ তার দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। সরকার মা-ইলিশ রক্ষার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে, তবে যদি সরকার ইলিশের দাম নির্ধারণ করে দেয়, তাহলে সাধারণ মানুষও সহজে ইলিশ কিনে খেতে পারবে।
চাঁদপুর মৎস্য ও বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার বলেছেন, মৎস্য আড়তে সিন্ডিকেটের ধারণা ভুল। ইলিশ দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো পণ্য হওয়ায় দাম প্রতিদিনের বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী ওঠানামা করে। একজন ব্যবসায়ী যদি কেজিতে ৫০ টাকা লাভ করে, তাহলে তা সিন্ডিকেটের অংশ নয়।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, অন্যান্য জেলা তুলনায় চাঁদপুরে ইলিশের দাম বেশি। বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম হাঁকছেন। কারণ, ইলিশ উৎপাদনে তেমন খরচ নেই, তাই এর মূল্য নির্ধারণের যুক্তি যাচাই করে সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে রাখার জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta