ঋণ থেকে মুক্তি পেতে ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের গল্প!
ঋণ থেকে মুক্তি পেতে এমন ঘটনাগুলোর নজির নতুন নয়, তবে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম (৫৫) যেটি ঘটিয়েছেন, তা একটি সিনেমার গল্পের মতোই।
দিনাজপুরের বিরল এলাকায় এক ব্যবসায়ীকে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনার রহস্য পুলিশ উদঘাটন করেছে, এবং বেরিয়ে এসেছে এক বিস্ময়কর তথ্য। ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম, যিনি ভান্ডারা ইউনিয়নের গোপালপুর বড় বাড়ি গ্রামের মৃত খোরশেদ আলীর ছেলে, সার-কীটনাশক ও ধান-ভুট্টার ব্যবসা করেন।
বিরল থানার ওসি আব্দুস সবুর জানান, ২৫ জুন দুপুর সোয়া ২টার দিকে বিরল থানার ওসি মোবাইল ফোনে খবর পান, বানিয়াপাড়া রেলগেট সংলগ্ন ব্রিজে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই হয়েছে। এই সংবাদ পাওয়ার পর তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ভিকটিম মো. মইনুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, তিনি বাড়ি থেকে ২৬ লাখ টাকা এবং বিরল শাখা থেকে ৮ লাখ টাকা তুলে মোট ৩৪ লাখ টাকা নিয়ে ঋণ পরিশোধ করতে অগ্রণী ব্যাংক দিনাজপুরে যাচ্ছিলেন। পথে বানিয়াপাড়া রেলগেট সংলগ্ন ব্রিজে অজ্ঞাতনামা ছিনতাইকারীরা তাকে রুখে দাঁড়িয়ে অস্ত্রের মুখে টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়।
সংবাদ পেয়ে পুলিশ সুপার দিনাজপুরসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে পুলিশ সুপার দিনাজপুরের নেতৃত্বে একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়, যারা বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও স্থান পরিদর্শন করে অনুসন্ধান শুরু করেন। তদন্তে জানা যায়, মইনুল ইসলাম বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ঋণগ্রস্ত ছিলেন। ঋণ পরিশোধে সমস্যার সম্মুখীন হয়ে তিনি এই ছিনতাইয়ের নাটক সাজান।
তদন্তকারী টিম মইনুল ইসলামকে তার বাড়ি তল্লাশি করতে গেলে তিনি পুরো ঘটনা স্বীকার করে নেন। তার বাড়ি সংলগ্ন অফিসে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ ১১ লাখ টাকা উদ্ধার করে, যার মধ্যে ৮ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করা ছিল। নিরাপত্তা কারণে, মো. মইনুল ইসলামের ইচ্ছায় ১১ লাখ টাকা থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta