নাসির-তামিমার মামলায় আদালতের বিব্রত অবস্থা, শেষে বদলি
ক্রিকেটার নাসির হোসেন এবং তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মির বিরুদ্ধে অন্যের স্ত্রীকে প্রলুব্ধ করে নিয়ে যাওয়া, ব্যভিচার ও মানহানির অভিযোগে দায়ের করা মামলার শুনানি চলাকালে আদালত বিব্রতবোধ করেন। এরপর মামলাটি অন্য আদালতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত দেন।
আজ সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান এই আদেশ প্রদান করেন। ওইদিন নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানা আত্মপক্ষ শুনানির জন্য আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
তাদের পক্ষ থেকে অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান দুলু আদালতে দুটি আবেদন করেন। এর মধ্যে একটির মাধ্যমে বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ করা হয়। কারণ, ১৬ এপ্রিল তিনি মিডিয়াতে দাবি করেছিলেন যে, নাসির হোসেন তামিমাকে প্রলুব্ধ করে নিয়ে গেছেন, যা এখন বিচারাধীন। এছাড়া, আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানির সময় উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, পুরো অভিযোগ না পড়ে সারসংক্ষেপ দেয়ার আবেদন করা হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান আদালতে অভিযোগ করেন যে, আসামিপক্ষের আইনজীবী একসময় বাদীপক্ষের হয়ে মামলা পরিচালনা করেছেন এবং এখন আইন অনুযায়ী তাকে আসামিপক্ষের পক্ষে মামলা পরিচালনা করার অনুমতি নেই।
ইশরাত হাসান বলেন, “আমি যা বলেছি তা সঠিক, আদালতকে নিয়ে কিছু বলিনি। ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করা কোন অপরাধ নয়। আমি আদালতে মোকাবেলা করব।”
দুই পক্ষের শুনানি শেষে আদালত বলেন, "এই আদালতে সময়ের অভাব রয়েছে, আমি বিব্রত বোধ করছি। মামলাটি অন্য কোর্টে পাঠিয়ে দিই।" এরপর আইনজীবীরা এতে আপত্তি জানাননি।
আদালত মামলাটি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আগে ১৬ এপ্রিল মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়, এবং আদালত ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে।
২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি, একই আদালত নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয়। তবে নাসিরের শ্বাশুড়ি সুমি আক্তারকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, বাদী ও বিবাদী উভয় পক্ষের রিভিশন আবেদন খারিজ করে মামলার বিচার চলবে বলে ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মুর্শিদ আহাম্মেদ আদেশ দেন।
এটি ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি, তামিমার সাবেক স্বামী রাকিব হাসান বাদী হয়ে দায়ের করেছিলেন।
মামলার অভিযোগ অনুসারে, তামিমা ও রাকিবের ২০১১ সালে বিয়ে হয় এবং তাদের একটি আট বছরের মেয়ে রয়েছে। ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তামিমা ও নাসির হোসেনের বিয়ের ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ পায়, যা রাকিবের নজরে আসে।
অভিযোগে বলা হয়, তামিমা রাকিবের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক থাকাকালীন নাসিরকে বিয়ে করেছেন, যা আইন অনুযায়ী অবৈধ। তামিমাকে প্রলুব্ধ করে নাসির নিজের কাছে নিয়ে গেছেন। এতে রাকিব ও তার মেয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছেন। এর ফলে রাকিবের মানহানি হয়েছে এবং তা তার জন্য অপূরণীয় ক্ষতি সৃষ্টি করেছে।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta