খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন, পুনর্বাসনের আবেদন
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের গজেন্দ্র চাপিলা মৌজায় আদালতের নির্দেশে গত ২৩ এপ্রিল সকালে একটি উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। এতে দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভানু রায় ও আকবার আলী পরিবারের সদস্যরা তাদের বাসস্থল হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন।
রোববার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আমিনুর রশীদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
জানা গেছে, মোকছেদ আলীর স্ত্রীর শুভা জান বেগম ১৯৭৪ সালে একটি দলিলের ভিত্তিতে আদালতে মামলা করলে, বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভানু রায় ও আকবার আলী পরিবার প্রায় ৩৬ বছর ধরে বৈধ লিজে ভিপি জমিতে বসবাস করছিল। পাশের ভিপি পুকুরটি মোকছেদ আলীর পরিবার ভোগ করত। প্রভাবশালী হওয়ায় মোকছেদ আলীর পরিবারের বিরুদ্ধে ভানু ও আকবার পরিবারের ওপর দীর্ঘকাল ধরে অত্যাচারের অভিযোগও রয়েছে।
চাপিলা ভূমি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গজেন্দ্র চাপিলা মৌজার ১৪২ দাগের ৪৪ শতক ভিপি জমির মধ্যে ভানু রায় ১০ শতাংশ, আকবার আলী ৯ শতাংশ এবং মোকছেদ আলী ২৫ শতাংশ জমি প্রতি বছর লিজ নিয়ে ব্যবহার করতেন। তবে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন যে, কোনো পূর্ব নোটিশ ছাড়া আদালতের আদেশে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে।
ভানু রায়ের ভাতিজা রুপ কুমার ও আকবার আলী বলেন, "৩৬ বছর ধরে আমরা এখানে বসবাস করছি। এখন আমাদের কোনো আশ্রয় নেই। আদালতের আদেশে কোনো নোটিশ ছাড়া আমাদের ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করা হয়েছে। ১৯৭৪ সালের একটি জাল দলিলের ভিত্তিতে আমাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে আমাদের সন্দেহ। আমরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাব এবং প্রশাসনের কাছে পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছি।"
মৃত মোকছেদ আলীর ছেলে হানিফ আলী বলেন, "সব কিছু আদালতের নির্দেশ অনুসারে হয়েছে, অতিরিক্ত কিছু বলার নেই।"
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহমিদা আফরোজ বলেন, "আদালতের নির্দেশে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। ভুক্তভোগীদের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে আইনি পরামর্শ দেওয়া হবে। তাদের পুনর্বাসন নিয়ে আলোচনা চলছে।"
ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর একমাত্র দাবি, তাদের বসবাসের স্থানে দ্রুত পুনর্বাসন নিশ্চিত করা হোক এবং মানবিক সংকট সমাধান করা হোক।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta