গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভায় টেন্ডার জমার দিনে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সোমবার (১৭ মার্চ) পৌরসভা কার্যালয়ের নিচে দলটির দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। 

পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ দ্রুত হস্তক্ষেপ করে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বিএনপির দুটি গ্রুপ—একটি সাবেক মেয়র ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমানের সমর্থক, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন এবং অন্যটি কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম বিষয়ক সহসম্পাদক ও শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির খানের সমর্থক, ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুনের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। 

শাহাদাত হোসেন অভিযোগ করেন, তিনি পৌরসভার লাইসেন্স সংক্রান্ত কাজে গিয়েছিলেন। কিন্তু মামুন তাকে সন্দেহ করে বাধা দেন ও অপদস্থ করেন। তিনি বলেন, আমি বিনা কারণে হামলার শিকার হয়েছি এবং ন্যায়বিচার চাই।

অন্যদিকে, মামুন এ অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি টেন্ডার জমা দিতে যাননি বরং কর সংক্রান্ত কাজে গিয়েছিলেন। শাহাদাত তার নেতা হুমায়ুন কবির খান সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করছিলেন। তিনি বলেন, আমি শুধু তাকে বলেছি সত্য-মিথ্যা যাচাই করতে চাইলে নেতার কাছে চলুন। 

এরপর তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক ও ধাক্কাধাক্কি হয়। মামুন বলেন, এটি কোনো টেন্ডার সংক্রান্ত ঘটনা নয় বরং ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি। পরে মুহূর্তেই ধাক্কাধাক্কির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াদ মাহমুদ জানান, পুলিশ আগেই পৌরসভায় উপস্থিত ছিল। দুই পক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হলে দ্রুত হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এখানে বড় কোনো সংঘর্ষ বা টেন্ডার সংক্রান্ত বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেনি।

কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার আহমেদ বলেন, টেন্ডার ড্রপিং কার্যক্রমের সময় তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন, তবে কোনো সরাসরি সংঘর্ষ দেখেননি। পরে ভিডিও দেখে জানতে পারেন যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। টেন্ডার জমার কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং ঘটনা তদন্ত করে প্রকৃত সত্য বের করা হবে।

ঘটনাটি স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এটি ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব নাকি রাজনৈতিক বিরোধ, তা নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। 

মুনতাসির/সাএ