রমেশের উইকেটের বেলস আমি ভেঙে দিয়েছিলাম
অভিষেক টেস্টের আগের রাত কেমন কেটেছিল?
বিকাশ রঞ্জন দাস : মনে হচ্ছিল উৎসবের মতো কিছু একটা হতে যাচ্ছে। আগের রাতে জানতে পারি আমি খেলছি, তখন প্রচণ্ড ভালো লেগেছিল। তবে খুব বেশি নার্ভাস ছিলাম না। আমাদের কোচ ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার এডি বার্লো এবং সহকারী কোচ ছিলেন সারোয়ার ইমরান স্যার। টিম মিটিংয়ে তারা বলেছিলেন, ফল যাই হোক, চাপ না নিয়ে খেলার কথা। খেলাটা যেন গ্যালারির মানুষ উপভোগ করে—এই বার্তা ছিল। শচীন, সৌরভ, দ্রাবিড়দের বিপক্ষে বল করার সুযোগ—এটা ছিল দারুণ রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা।
দলের পরিবেশ কেমন ছিল?
বিকাশ রঞ্জন দাস : দলে সবার মধ্যে এক ধরনের উৎসবমুখর ভাব বিরাজ করছিল। কেউ খুব একটা চাপ নিচ্ছিল না। কোচ এডি বার্লো ও ইমরান স্যার আমাদের রিলাক্স থাকতে বলেছিলেন। বোর্ড থেকেও বলা হয়েছিল, ফল নয়, উপভোগ করে খেলতে।
অভিষেকে বুলবুল ভাইয়ের ১৪৫ রানের ইনিংস নিয়ে কী বলবেন?
বিকাশ রঞ্জন দাস : অসাধারণ। বুলবুল ভাই যে ধৈর্যের সঙ্গে ইনিংসটি খেলেছিলেন, তা অনন্য। টেস্টে যেই মানসিকতা ও টেকনিক দরকার, তার সবটাই ছিল তার খেলায়। প্রায় ৩৮০ বল খেলে এমন ইনিংস গড়া সত্যিই কঠিন।
ভবিষ্যতের বাংলাদেশ ক্রিকেট কেমন দেখতে চান?
বিকাশ রঞ্জন দাস : বলতে গেলে গত ২৫ বছরে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি। কাঠামোগত উন্নয়নের অভাব স্পষ্ট। ব্যক্তি অর্জন থাকলেও দলীয় সফলতা কম। পরিকল্পনা দরকার, সঠিক নেতৃত্ব দরকার। স্বপ্ন দেখি বাংলাদেশ একদিন বিশ্বের সেরা তিন টেস্ট দলের মধ্যে থাকবে।
সেরা টেস্ট ব্যাটার কে?
বিকাশ রঞ্জন দাস : মুশফিকুর রহিম। টেস্টের জন্য যে মনোযোগ, ধৈর্য ও কমিটমেন্ট দরকার, তার সবই আছে মুশফিকের মধ্যে। সে টেকনিক্যালি খুবই সলিড।
সেরা টেস্ট বোলার?
বিকাশ রঞ্জন দাস : ইবাদতের আগ্রাসী মানসিকতা ভালো লাগে। তাসকিনও দারুণ। তবে মাশরাফি দীর্ঘদিন খেলতে পারেননি। সব বিবেচনায় তাইজুল ইসলামকে আমি সেরা টেস্ট বোলার মনে করি। আর সাকিব আল হাসান হলেন সেরা অলরাউন্ডার।
বাংলাদেশের হয়ে সেরা টেস্ট ইনিংস?
বিকাশ রঞ্জন দাস : অনেকেই ভালো খেলেছে, তবে মুশফিকের ডাবল সেঞ্চুরি (গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, ২০১৩) আমার চোখে সেরা। বুলবুল ভাইয়ের অভিষেক ইনিংসটিও ছিল দুর্দান্ত।
সেরা বোলিং পারফরম্যান্স?
বিকাশ রঞ্জন দাস : তাইজুলের ৮ উইকেট নেওয়ার স্পেল (মিরপুর, ২০১৪, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে) ছিল অসাধারণ। এটা স্পিনারের জন্য আদর্শ উদাহরণ।
সেরা টেস্ট জয়?
বিকাশ রঞ্জন দাস : ২০২২ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়টা সবচেয়ে বড়। ২০০৫ সালের প্রথম জয়টিও ছিল দারুণ স্মরণীয়।
আপনার টেস্ট ক্যারিয়ার...
বিকাশ রঞ্জন দাস : মাত্র ১টি টেস্ট খেলেছি। আরও বড় হতে পারত, কিন্তু পিঠের ব্যথা বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। তবু গর্ব হয়, আমি একজন টেস্ট ক্রিকেটার। ওই ম্যাচের স্মৃতি আজও মনে গেঁথে আছে। সদাগোপান রমেশকে আমি বোল্ড করেছিলাম। আম্পায়ার স্টিভ বাকনার ভাঙা বেলসটা আমাকে দিয়েছিলেন, বলেছিলেন এটা রেখে দাও—এটা তোমার স্মৃতি হয়ে থাকবে।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta