কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জের খারাপ সড়কে চরম দুর্ভোগ, বাড়ছে দুর্ঘটনা
সড়কের পিচ ও পাথর উঠে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। কিছু জায়গায় কাদা জমে আছে। প্রথমবার দেখলে মনে হবে এটি সড়ক নয়। এসব স্থানে ভারী যান চলাচল করতে গিয়ে বিকল হয়ে পড়ছে এবং দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। সড়কটির বেহাল দশা দিয়ে পাঁচ উপজেলার লাখো মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
অটো রিকশা চালক রায়হান সড়কে খানা-খন্দ দেখার পর সাবধানে গাড়ি চালাচ্ছিলেন, কিন্তু একটি গর্তের কাদায় আটকে যায় তার রিকশা। রিকশা ঠেলে বের করা গেলেও পুরো সড়ক জুড়ে একাধিক গর্ত থাকায় তাকে বারবার বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হয়।
কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের সতাল এলাকায় গিয়ে রায়হানসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের একই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়। বৃষ্টির দিনে সড়কটি যেন চাষযোগ্য জমিতে পরিণত হয়। তবে কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ, নিকলী, ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও তাড়াইল যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়ায় দুর্ভোগ সত্ত্বেও প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করছে।
এ সড়কটি কিশোরগঞ্জ শহর থেকে করিমগঞ্জ, নিকলী, তাড়াইল, ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রামসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যাতায়াতের অন্যতম সড়ক। এখানে বেশ কিছু সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার ফলে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে।
কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের সতাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সতাল নুরানি মাদ্রাসা থেকে সতাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত সড়কের কার্পেটিং উঠে গিয়ে বিশাল গর্তে পরিণত হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে গর্তগুলো পূর্ণ হয়ে কাদা জমে আছে। যানবাহন চলাচল অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।
সতাল এলাকার বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির এই অবস্থা। সড়কের কোথাও খানা-খন্দ আবার কোথাও উঁচু-নিচু ঢিবি রয়েছে। এটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
ট্রাকচালক হবি মিয়া বলেন, বহুদিন ধরেই এই সড়কের অবস্থা এমনই, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় এবং দুর্ঘটনা ঘটছে।
ইজিবাইক চালক আওয়াল, অটোরিকশা চালক হাবিবুল, রিকশাচালক জয়নালসহ অন্যান্য চালকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন সড়কের এই পরিস্থিতি নিয়ে।
তারা বলেন, সারাদেশে সড়কগুলোর উন্নতি হলেও কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ সড়কটির উন্নয়ন হয়নি।
কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের পাশের ব্যবসায়ী কায়সার আহমেদ আরমান জানান, সড়কটির বেহাল অবস্থা বহুদিন ধরে, বিশেষ করে গত দুই সপ্তাহে বৃষ্টির পর থেকে সড়কটির গর্তে অটোরিকশা প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
অনেক যানবাহন চালকরা জানান, এই খারাপ রাস্তার কারণে তাদের যানবাহন দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং দুর্ঘটনা ঘটছে। তারা আশঙ্কা করছেন, যদি সড়কটির সংস্কার দ্রুত না হয় তবে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
কিশোরগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে এবং পৌরসভা কর্তৃক ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হয়েছে। একটি টিম তৈরি করে সড়কের সমস্যা সমাধানে কাজ করা হবে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কিশোরগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, বৃষ্টির কারণে গর্ত সৃষ্টি হওয়া স্থানে আপতত পানি সরিয়ে রিপেয়ারিং করা হবে এবং সড়কটির প্রশস্তকরণের কাজ শিগগিরই শুরু হবে।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta