দুর্ঘটনা প্রবণ ১৫৯ কিলোমিটার
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কটি বাংলাদেশের ব্যস্ততম সড়কগুলোর একটি। এর অধিকাংশ অংশের প্রস্থ ১৮-৩৪ ফুট মাত্র, যা দূরপাল্লার গাড়ির জন্য পর্যাপ্ত নয়। ফলে গাড়িগুলো স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারে না। ১৫৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সড়কটি পার করতে বাসের সময় লাগে প্রায় ৫ থেকে সাড়ে ৫ ঘণ্টা। অতিরিক্ত বাঁক এবং সাইড রোড থেকে গাড়ির প্রবেশের কারণে এই সড়কটি দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতি লবণ পরিবহনজনিত কারণে সড়কটি পিচ্ছিল হয়ে আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার জন্য জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) অর্থায়নের কথা থাকলেও এটি এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।
স্থানীয় সংবাদকর্মী রায়হান জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এতে কিছু বিপজ্জনক বাঁক রয়েছে। যদি এই সড়কটি চার লেনে উন্নীত করা হয়, তবে দুর্ঘটনা অনেকটাই কমে আসবে। লোহাগাড়া ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার রাখাল চন্দ্র রুদ্র বলেন, ঈদে তিন দিনে মহাসড়কে তিনটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে, যেমন লবণপানি পড়ে সড়ক পিচ্ছিল হওয়া, বিপজ্জনক বাঁক, এবং অন্য জেলার চালকদের অভিজ্ঞতার অভাব। কক্সবাজার ট্রাক মালিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি নঈমুল হক চৌধুরী বলেন, ট্রাকে লবণ পরিবহন করতে পলিথিন ব্যবহার করতে বারবার বলা হলেও তা কার্যকর হয়নি। লবণপানি সড়কে পড়ায় যানবাহন চলাচল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে।
নিরাপদ সড়ক চাই কক্সবাজার জেলা সভাপতি জসিম উদ্দিন কিশোর জানান, সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার কোনো বিকল্প নেই। কক্সবাজার চেম্বার সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী বলেন, পর্যটন ও ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে উন্নতি আনার জন্য এই মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করা জরুরি। কক্সবাজার সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী বলেন, সড়কটির প্রশস্ত করার একটি প্রকল্প রয়েছে, যা এখনো সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর্যায়ে রয়েছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার জন্য ১৬ ফেব্রুয়ারি লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে ছাত্র-জনতা। এ স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, মহাসড়কটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, বিশেষ করে কিছু এলাকায় বিপজ্জনক বাঁক রয়েছে। সড়কটি এতটাই সরু যে, দুটি স্লিপার কোচ একে অপরকে পাশ কাটাতে গেলে একটি রিকশাও যাওয়ার জায়গা পায় না। শুষ্ক মৌসুমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে লবণ পরিবহন করতে ট্রাক বা কাভার্ড ভ্যান ব্যবহার করা হয়, যার ফলে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে যায়। বাইকার ও পিকনিক বাসের চালকরা সড়কের প্রকৃতি বুঝতে পারেন না, ফলে তারা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটান। তাই নিরাপদ সড়ক বা চার লেন সড়কের দাবী জানান ছাত্র-জনতা।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta