স্বজনদের ঈদ উপহার দিতে গিয়ে নিহত হলেন তিন ভাই
ঢাকা থেকে নিয়ে আসা ঈদ উপহার স্বজনদের কাছে পৌঁছাতে পারেনি তিন ভাই। রাজিব পরিবহনের একটি বাসের সাথে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে তাদের মৃত্যু হয়।
শনিবার (২৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের সোনারবাংলা এলাকায় পাথরঘাটা-মঠবাড়িয়া সড়কে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। বাসের সুপারভাইজার সজীব হাওলাদার (২১) এবং হেল্পার সোহেল সর্দার (২৬) আটক করেছে পুলিশ, তবে বাসের চালক পালিয়ে যায়।
নিহত তিন ভাই হলেন- পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার টিকিকাটা ইউনিয়নের বাইশকুরা গ্রামের মো. নাসির উদ্দিন খানের ছেলে নাঈমুজ্জামান খান শুভ (২২), শান্ত খান (১৪) ও নাদিম খান (৮)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে পাথরঘাটা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া রাজিব পরিবহনের একটি বাস পাথরঘাটা-মঠবাড়িয়া সড়কের সোনারবাংলা এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে পড়ে। এতে মোটরসাইকেলে থাকা তিন ভাই ঘটনাস্থলে নিহত হন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতদের বাবা মো. নাসির উদ্দিন রাঙামাটিতে শ্রমিকের কাজ করেন। তিন বছর আগে তার আরেক ছেলে পানিতে ডুবে মারা যায়। এখন তিন ছেলেকে নিয়ে তিনি নতুন করে স্বপ্ন দেখছিলেন, কিন্তু একই দিনে তাদের মৃত্যু হলো। বড় ছেলে শুভ ঢাকায় চাকরি করত এবং পরিবারের খরচ বহন করত, অন্য দুই ছেলে শান্ত এবং নাদিম পড়াশোনা করছিল।
নিহত তিন ভাইয়ের মা শিউলি বেগম বলেন, “আমার তিন ছেলে মোটরসাইকেলে আমার দেবরের শ্বশুরবাড়িতে যাচ্ছিল। বড় ছেলে ঢাকায় চাকরি করত এবং ঈদ উপলক্ষে সেখানে তার দেবরের ছেলেকে জামা-কাপড় কিনে পাঠিয়েছিল। আজ সকালে সে বাড়িতে এসে সেগুলো নিয়ে বের হয়েছিল, কিন্তু পথেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।”
পাথরঘাটা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী হাসান জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং বাসের সুপারভাইজার ও হেল্পারকে আটক করে। আইনি কার্যক্রম শেষে নিহতদের মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া, ঘাতক বাসটিকে জব্দ করা হয়েছে এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta