ডিবি হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আসামীর মৃত্যু নিয়ে অভিযোগ
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার হেজাজ বিন আলম, যার আরেক নাম এজাজ আহমেদ বা ইজাজ, পুলিশে গ্রেপ্তার হওয়ার পর মারা যান। শনিবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে।
হত্যা মামলায় এজাজকে ভোরে ধানমন্ডির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে পরবর্তীতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ইজাজ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের সহযোগী হিসেবে কাজ করছিলেন। তবে তার মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে তার পরিবারের পক্ষ থেকে।
পুলিশ জানায়, এজাজের বাসা হাজারীবাগ থানার এলাকায় ছিল। তিনি মোহাম্মদপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের 'ডান হাত' হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ১০ মার্চ ডাকাতি মামলায় যৌথ বাহিনী তাকে মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন তাকে মোহাম্মদপুর থানার মামলায় আদালতে পাঠানো হয়, যেখানে তিনি জামিন পান।
এজাজের বাবা শাহ আলম খান জানান, তার ছেলের কিডনিতে পাথর ছিল এবং গ্রেপ্তারের পর তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। এর ফলে তার কিডনির সমস্যা আরও বেড়ে যায়। জামিন পাওয়ার পর তাকে জিগাতলার জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জামিনে থাকা সত্ত্বেও শনিবার ভোরে হাসপাতাল থেকে ডিবি এবং মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ তাকে ফের গ্রেপ্তার করে। অসুস্থ অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ঈদের পর তার লন্ডনে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুর রহমান জানান, ১০ মার্চ গ্রেপ্তার হওয়ার আগেই এজাজ শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তাকে চিকিৎসা দেওয়ার পর ১১ মার্চ তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছিল।
ঢামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, বিকেল সোয়া ৫টার দিকে এজাজকে ওয়ার্ড থেকে ডায়ালাইসিস বিভাগে নেওয়া হয়, এবং সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়। তার স্বজনরা মরদেহটি হাসপাতাল থেকে জোরপূর্বক বাসায় নিয়ে যান, পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ তা মর্গে পাঠায়।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি আলী ইফতেখার হাসান জানান, এজাজ জামিন পাওয়ার পর জানা যায় যে তিনি জুলাই-আগস্টে ছাত্র হত্যা মামলার আসামি ছিলেন এবং তাকে গ্রেপ্তারের জন্য খোঁজা হচ্ছিল।
পরে জানা যায়, এজাজ জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ভোরে ডিবির সহায়তায় তাকে হেফাজতে নেওয়া হয় এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, তার সঙ্গে ছিল তার স্বজনরা।
পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন কারাবাসের পর ১৫ আগস্ট এজাজ জামিনে মুক্তি পান এবং এরপর থেকেই তিনি বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, অপহরণসহ নানা অপরাধে জড়িত ছিলেন। তিনি সন্ত্রাসী গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, যার শতাধিক সদস্য ছিল। এজাজের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ছিল।
একটি সূত্র জানায়, এজাজের নেতৃত্বে কিছুদিন আগে এলিফ্যান্ট রোডে এক ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয় ও কোপানো হয়।
মুনতাসির/সাএ
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta