মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সুপারিশে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর বিরুদ্ধে
ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের স্বাধীন প্যানেল ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র) শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের হত্যার পরিকল্পনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করা হয়েছে।
মার্কিন প্যানেলের বার্ষিক প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভিয়েতনাম ধর্মীয় বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা বাড়িয়েছে এবং এই কারণে দেশটি “বিশেষ উদ্বেগের দেশ” হিসেবে তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখতে চাইছে ওয়াশিংটন, কারণ চীন নিয়ে তাদের অভিন্ন উদ্বেগ রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে এশিয়া ও অন্যান্য অঞ্চলে চীনের প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ার বিপরীতে ভারতকে সহায়তা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এই কারণে ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো বিষয়গুলো উপেক্ষিত হচ্ছে। তবে, প্যানেলের সুপারিশ বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক না হওয়ায় মার্কিন সরকারের ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সম্ভাবনা কম।
২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা অভিযোগ করে, ভারত শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের লক্ষ্য করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। এর ফলে, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের মধ্যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে র-এর সাবেক কর্মকর্তা বিকাশ যাদবের বিরুদ্ধে শিখ নেতাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ভারত শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে মনে করে এবং বিদেশে তাদের হত্যাচেষ্টার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ইউএসসিআইআরএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে ২০২৪ সালে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও বৈষম্য বেড়ে যাওয়ার কারণে ধর্মীয় স্বাধীনতা পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তার দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) গত বছরের নির্বাচনী প্রচারে মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য ও ভুল তথ্য প্রচার করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনেও ভারতে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, ভারত এই প্রতিবেদনকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিহিত করেছে।
২০১৪ সাল থেকে ভারতে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় রয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি দেশের সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিরুদ্ধে বৈষম্য অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন যে তার সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সকল সম্প্রদায়কে সহায়তা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীন প্যানেল ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের কারণে ভারতকে “বিশেষ উদ্বেগের দেশ” হিসেবে মনোনীত করার এবং র' ও যাদবের বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারের নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করেছে। তবে, ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
সূত্র: রয়টার্স।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta