দক্ষিণ কোরিয়ায় মারাত্মক দাবানল, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৮
দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে মারাত্মক দাবানল ছড়িয়ে পড়ার পর মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৮ জনে পৌঁছেছে এবং অন্তত ১৯ জন আহত হয়েছে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছে দেশটির স্বরাষ্ট্র ও নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়।
ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সু এই পরিস্থিতিকে অত্যন্ত উদ্বেগজনক উল্লেখ করে বলেছেন, 'এটি আমাদের দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বিপজ্জনক দাবানল।' সূত্র: রয়টার্স
এখন পর্যন্ত ২৩ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দাবানলের ফলে বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এর মধ্যে ১৩শ’ বছরের পুরনো গউনসা বৌদ্ধ মন্দির সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।
বুধবার (২৬ মার্চ) দুপুরে উইসিয়ং কাউন্টির পাহাড়ে একটি অগ্নিনির্বাপক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে। এই দুর্ঘটনার কারণ জানার জন্য কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে।
প্রায় ৫ হাজার সেনাসদস্য এবং হাজার হাজার দমকলকর্মী আগুন নেভাতে কাজ করছেন। দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত মার্কিন বাহিনীর হেলিকপ্টারও আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করছে।
মঙ্গলবার, জাতীয় অগ্নি সংস্থা চলতি বছরের সর্বোচ্চ অগ্নি সতর্কতা জারি করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় সাধারণত দাবানল বিরল হলেও চলমান দাবানলটি দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে।
এখন পর্যন্ত ১৭ হাজার হেক্টরের বেশি বনভূমি পুড়ে গেছে, যা আয়তন অনুযায়ী দক্ষিণ কোরিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম দাবানল।
উইসিয়ং শহরের আগুনে ৬১৮ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত গউনসা মন্দিরের সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া জোসন রাজবংশের (১৩৯২-১৯১০) সময়ের একটি ঐতিহাসিক স্থাপত্যও পুড়ে গেছে।
প্রেসিডেন্ট হান জানিয়েছেন, সব ধরনের মানবসম্পদ ও যন্ত্রপাতি মোতায়েন করা হয়েছে, তবে প্রবল বাতাস দমকলকর্মীদের কাজ বাধাগ্রস্ত করছে।
তিনি আরও জানান, 'আমরা এখন বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছি, যা দাবানল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে।'
বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া স্বাভাবিকের তুলনায় শুষ্ক আবহাওয়ার মধ্যে রয়েছে, যেখানে বৃষ্টিপাতও অনেক কম হয়েছে। চলতি বছর ইতোমধ্যে ২৪৪টি দাবানল ঘটেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২.৪ গুণ বেশি।
শুক্রবার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সানচিয়ং কাউন্টিতে প্রথম দাবানল শুরু হয়, যা দ্রুত পার্শ্ববর্তী শহরগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।
বার্তা সংস্থা ইয়োনহ্যাপ জানিয়েছে, সরকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোকে 'বিশেষ দুর্যোগপূর্ণ এলাকা' হিসেবে ঘোষণা করেছে। দাবানলে এ পর্যন্ত ৩৭ হাজার ৬৫ একর এলাকা পুড়ে গেছে।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta