ইউনূস সাহেব, দয়া করে দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করুন: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ইউনূস সাহেব, দয়া করে দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করুন। এর মাধ্যমে জনগণ তাদের ইচ্ছেমতো সরকার গঠন করতে পারবে। আপনি যতই বলুন, আপনি তো নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হননি। যত দেরি করবেন, হাসিনা দিল্লি থেকে টেলিফোনে ও ইউটিউব-ফেসবুকে বলবে ‘আমি আসছি, আমি দ্রুত আসছি।’
বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৬টায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দেবীপুর ইউনিয়নের মুন্সিহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক গণসংযোগ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেরি না করে সংস্কারগুলো শেষ করে নির্বাচন দিন। দেশে অনেক কিছু ঘটছে, যা দেশের জন্য আরও ক্ষতিকর হতে পারে যদি দেরি হয়। তাই নির্বাচন দিন, নির্বাচন দিলে সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিচার হবে। তিনি হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছেন, অনেকের মা-বোনের সম্ভ্রম নষ্ট করেছেন। তার সব কিছুর জবাব শেখ হাসিনাকে দিতে হবে। আলেমদের ফাঁসিতে ঝুলিয়েছেন, নির্যাতন করেছেন, তারও জবাব দিতে হবে। একটি রাষ্ট্র এইভাবে চলতে পারে না। যে ব্যক্তি রাষ্ট্র চালায় তার মন বড় হতে হবে। সবাইকে সমানভাবে দেখতে হবে এবং ভালোবাসতে হবে। প্রমাণ হয়েছে, শেখ হাসিনার দেশের মানুষের প্রতি কোনো মায়া-দয়া নেই। যদি থাকত, তিনি এমনভাবে পালিয়ে যেতেন না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামি লীগ ও তাদের নেত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে। কিন্তু আমরা পালিয়ে যাইনি। আমাদের নেত্রী ম্যাডাম খালেদা জিয়া ছয় বছর জেল খেটেছেন তবুও দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি। আমি ১১ বার জেলে গেছি, পুলিশ আমাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেছে, কিন্তু পালাইনি। আমরা বলেছি, আমরা সামনে আছি, আমাদের নিয়ে যাও। কারণ আমরা রাজনীতি করি, চুরি-ডাকাতি করি না যে ভয় পাব।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা দেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। তিনি পালিয়ে গেছেন, কিন্তু আমাদের বিপদে ফেলে রেখে গেছেন। এখন আমাদের দেশটাকে নতুন করে তৈরি করতে হবে, রাষ্ট্রের কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। এজন্য আমাদের নেতা তারেক রহমান ৩১ দফা ঘোষণা করেছেন, যাতে দেশটাকে ভালো করা যায়।
তিনি আরও বলেন, এই সরকার আসার পর থেকেই সংস্কার শুরু করেছে। সংস্কার হলো একটি পুকুর, যা মাটি দিয়ে ভরাট হয়ে যায়, কিন্তু যদি সেই পুকুরে মাটি পরিষ্কার করে পানি জমাতে পারা যায় এবং মাছ চাষ করতে পারা যায়, তবে সেটাকেই প্রকৃত সংস্কার বলা যাবে। ঠিক তেমনই, বাংলাদেশে এই সরকার দেশটাকে পরিষ্কার বা সংস্কার করছে।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছর আমরা ভোট দিতে পারিনি। নির্বাচন ব্যবস্থা পরিবর্তন করে এমনভাবে গঠন করতে হবে যাতে আমরা ভোট দিতে পারি। কথা বলার স্বাধীনতা দিতে হবে, পত্র-পত্রিকায় লেখার স্বাধীনতা দিতে হবে। আমি কোনো দলের পক্ষে থাকতে চাইলে আমাকে জেলে দেওয়া হবে বা আমার ছেলের চাকরি বন্ধ হবে—এই ধরনের ব্যবস্থা আমরা চাই না। আমরা একটি স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা চাই, যেখানে সরকারের কথায় বিচারক রায় দেবেন না।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta