‘সবুজ’ ক্রিপ্টোকারেন্সি গ্রহণে আগ্রহী ভুটান
হিমালয়ের দেশে ভুটান এখন জলবিদ্যুৎ ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব ‘সবুজ’ ক্রিপ্টোকারেন্সি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে, যার মাধ্যমে তারা তাদের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে চায়।
গত কয়েক বছর ধরে ভুটান বিশ্বের জনপ্রিয় কিছু ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করেছে এবং সেখান থেকে তারা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আয় করেছে।
একটি সাক্ষাৎকারে দেশটির একাধিক কর্মকর্তা জানান, সেই আয় দিয়ে থিম্পু গত দুই বছর ধরে সরকারি কর্মচারীদের বেতন প্রদান করেছে।
এখন ভুটান নিজের দেশে ক্রিপ্টোকারেন্সি তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছে, তবে এটি সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব জলবিদ্যুৎ দ্বারা চালিত হবে।
রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দ্রুক হোল্ডিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জ্বল দীপ দাহাল বলেন, ‘আমরা সম্পূর্ণরূপে জলবিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল এবং আমাদের দেশে জলবিদ্যুৎ ব্যবহার করে খনিত প্রতিটি ডিজিটাল কয়েন জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে উৎপন্ন কয়েনের তুলনায় পরিবেশের ওপর একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।’
ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং বা তৈরি করতে শক্তিশালী কম্পিউটারের নেটওয়ার্ক প্রয়োজন এবং সেগুলো চালাতে প্রচুর বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়, যার জন্য ভুটান নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করছে।
দাহালের প্রতিষ্ঠানটি ভুটানের একমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থা নিয়ন্ত্রণ করে এবং ২০১৯ সাল থেকে ক্রিপ্টোকারেন্সিকে তাদের বিনিয়োগ পোর্টফোলিওতে অন্তর্ভুক্ত করেছে, যা তারা একটি কৌশলগত বিনিয়োগ হিসেবে দেখছে।
ভুটান তার ‘গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস’ সূচকের জন্য পরিচিত, যেখানে সারা বিশ্ব থেকে বিনোদন, মানসিক সুস্থতা ও টেকসই উন্নয়নের মতো বিষয়গুলিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
ভুটান এখন প্রচুর বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী সুপারকম্পিউটার চালাতে জলবিদ্যুৎ ব্যবহার করছে এবং কর্তৃপক্ষ এখন দেখছে, বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো এই ‘সবুজ’ কয়েন কিনতে আগ্রহী হবে কিনা।
দাহাল বলেন, ‘বিটকয়েন শুধু জলবিদ্যুতের দাম বাড়ায়নি, পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রায় তারল্য বৃদ্ধি করতে সাহায্য করেছে।’
তিনি আরও জানান, ব্লকচেইন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ে ভুটানের তরুণদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে।
ভুটানের প্রায় ৮ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে অনেক শিক্ষিত তরুণ উন্নত ভবিষ্যতের আশায় বিদেশে চলে যাচ্ছে, এবং সরকারের মতে, ২০২৪ সালে তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার ১৬.৫ শতাংশে পৌঁছাবে।
বিশ্লেষকদের মতে, ভুটান যদি সবুজ ডিজিটাল মুদ্রার কেন্দ্র হতে চায়, তবে তাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি, যা বর্তমানে ৩.৫ গিগাওয়াট থেকে আগামীতে ৩৩ গিগাওয়াটে উন্নীত করতে হবে।
দাহাল বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরে ১৫ গিগাওয়াট উৎপাদনের।’
সূত্র : ডয়চে ভেলে ও রয়টার্স।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta