দেশে ‘গৃহযুদ্ধের পরিকল্পনা এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ড. রাব্বি আলমসহ ৭৩ জনের নাম উল্লেখ করে মোট ৫০৩ জনকে এই মামলায় আসামি করা হয়েছে, যাঁরা শেখ হাসিনার সঙ্গে একটি অনলাইন মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এই মামলা দায়ের করা হয়। আদালত অভিযোগ গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ নামে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মিটিংয়ে ‘গৃহযুদ্ধের পরিকল্পনা ও বর্তমান সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র’ করার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ১২১, ১২১ক, ১২৪ক ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।

মামলার এজাহারের উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বাদী গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে জানতে পারেন যে, ১৯ ডিসেম্বর অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মিটিংয়ে ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ গঠন করে গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী করার জন্য যুদ্ধ করার অঙ্গীকার করেন অনেকেই। মোট ৫৭৭ জন দেশ-বিদেশ থেকে মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেন এবং শেখ হাসিনার নির্দেশ পালন করার বিষয়ে ঐক্যমত প্রকাশ করেন।”

"ড. রাব্বি আলমের হোস্টিংয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং হোস্ট, কো-হোস্ট ও অংশগ্রহণকারী নেতাদের কথোপকথনে ভয়েস রেকর্ড পর্যালোচনায় দেখা যায়, ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ প্ল্যাটফর্মে অংশগ্রহণকারীরা বর্তমান সরকারকে উৎখাত করতে গৃহযুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।”

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এতে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধের সুস্পষ্ট উপাদান পাওয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়, যা আদালত গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।”

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যার অভিযোগে নানা থানায় ও আদালতে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়।

এদিকে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই মাসে সংঘাতের ঘটনায় ‘গণহত্যা’ হিসেবে বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের উদ্যোগ নেয়। শেখ হাসিনার সময় গুমের অভিযোগেও বেশ কিছু মামলা দায়ের হয়েছে।

এখন পর্যন্ত ‘গণহত্যা’, ‘গুম’ এবং শাপলা চত্বরে ‘গণহত্যা’র তিন মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। তবে ভারত তার প্রত্যর্পণ আবেদন গ্রহণ করেনি।