ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা 'র' এর উপর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব
ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে অমানবিক আচরণের ঘটনা বাড়ছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের স্বাধীন প্যানেল ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতীয় বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র)-এর বিরুদ্ধে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনটি জানায়, কমিউনিস্ট শাসিত ভিয়েতনাম ধর্মীয় বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর হতে শুরু করেছে, যার ফলে দেশটিকে ‘‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে চীন সম্পর্কে অভিন্ন উদ্বেগের কারণে ভিয়েতনামের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে চীনের প্রভাবের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ হিসেবে দেখছে, তাই ভারতীয় মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রাথমিক মনোযোগ দেওয়া হয়নি। তবে, প্যানেলের সুপারিশ বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক না হওয়ায় মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের সম্ভাবনা কম।
২০২৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা অভিযোগ করছে যে, ভারত শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, যার কারণে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জটিল হয়ে উঠেছে। একই সময়ে, র’-এর সাবেক কর্মকর্তা বিকাশ যাদবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে এক শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে হত্যা চেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
ভারত শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের দেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করে এবং বিদেশে তাদের হত্যাচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ইউএসসিআইআরএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে ২০২৪ সালে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলা ও বৈষম্য বৃদ্ধি পাবে, ফলে দেশটির ধর্মীয় স্বাধীনতা পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, নির্বাচনী প্রচারের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুসলিমদের ‘‘অনুপ্রবেশকারী’’ আখ্যা দিয়ে বিদ্বেষমূলক বক্তৃতা ও ভুল তথ্য ছড়িয়ে দিয়েছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা সম্পর্কিত প্রতিবেদনে ভারতে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের কথা উল্লেখ করা হলেও, ভারত এই প্রতিবেদনকে ‘‘অত্যন্ত পক্ষপাতদুষ্ট’’ বলে দাবি করেছে।
২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আসা নরেন্দ্র মোদি সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তার সরকারের প্রকল্পগুলো সকল সম্প্রদায়ের জন্য সহায়ক।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীন প্যানেল ভারতকে ‘‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’’ হিসেবে মনোনীত করার এবং র’-এর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করেছে, তবে ভারতীয় দূতাবাসের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta