‘শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে অগ্রগতি হলে রাষ্ট্র এগিয়ে যাবে’
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়ন নিশ্চিত করা গেলে কোনো দেশই পিছিয়ে থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
বুধবার রাজধানীর মিরপুরে প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (পিটিআই) ‘মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৫’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘একটি সুসংগঠিত ও উন্নত রাষ্ট্র গঠনের জন্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতকে যথাযথভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। এ দুটি খাত কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর সম্পদ নয়, বরং রাষ্ট্র ও জনগণের সম্পদ। চীনের বিশাল জনগোষ্ঠী থাকা সত্ত্বেও তারা অর্থনৈতিকভাবে এতটা এগিয়েছে, কারণ তারা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘একজন সু-নাগরিক হতে হলে তাকে শিক্ষিত ও শারীরিকভাবে সক্ষম হতে হবে। যদি একটি জাতি শারীরিকভাবে সুস্থ, শিক্ষিত ও দক্ষ হয়, তবে সে দেশ কখনো পিছিয়ে থাকবে না। চীন তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্য একটি মৌলিক অধিকার, যা কারো পছন্দের বিষয় হতে পারে না। একইভাবে শিক্ষা সার্বজনীন হওয়া উচিত এবং এটাও মৌলিক অধিকারের অন্তর্ভুক্ত হওয়া প্রয়োজন। আমাদের সংবিধানে এসব অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, এখন তা বাস্তবায়ন করতে হবে। যদি সত্যিকার অর্থে আমরা বাংলাদেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই, তাহলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য উন্নয়নের বিকল্প নেই।’
বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, ‘কোটা আন্দোলন অনেকটাই সীমিত পরিসরে ছিল। সরকারি চাকরির কোটায় কতজন সুযোগ পাবে—এটাই ছিল মূল বিষয়। তবে আন্দোলনকারীরা বৃহত্তর পরিপ্রেক্ষিতে সমস্যাগুলো উপলব্ধি করতে বাধ্য হন। কারণ তারা বিদ্যমান শাসন ব্যবস্থায় অসন্তুষ্ট ছিলেন এবং পরিবর্তনের প্রয়োজন অনুভব করেছিলেন।’
অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় আরও বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দেশে বৈষম্য কমানো যাবে না এবং স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ও সংবিধানে উল্লিখিত মৌলিক চাহিদাগুলো—অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষা—প্রত্যেকের জন্য নিশ্চিত করা যাবে না, ততক্ষণ দেশে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি আশা করা সম্ভব নয়। এটি আমাদের সকলের দায়িত্ব যে, আমরা আমাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে এই লক্ষ্য অর্জনে কাজ করি। এটি আমাদের নিজেদের ভবিষ্যতের জন্যও অপরিহার্য।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা। এছাড়া বক্তব্য রাখেন বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ইউনিটের মহাপরিচালক এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বাজেট ও অডিট) মো. সাখাওয়াৎ হোসেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আবু নূর মোহাম্মদ শামসুজ্জামান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পিইডিপি-৪) আতিকুর রহমান, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক দেবব্রত চক্রবর্তী, শিশু কল্যাণ ট্রাস্টের পরিচালক সুরাইয়া খান ও পিটিআই ইনস্ট্রাক্টর আবু বকর সিদ্দিক।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta