ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছাড়লেও আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা থেমে থাকেনি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এ বিষয়ে নিজেদের মতামত প্রকাশ করলেও, এবার নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, তারা আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণে বিরোধী। "আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক, এটা আমরা চাই না। যারা দলটির ভেতরে অন্যায় কর্মকাণ্ডে লিপ্ত, তাদের অবশ্যই বিচার করা উচিত,"—সোমবার (১৭ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ডিপ্লোম্যাটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব মন্তব্য করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে তিনি নতুন দলের চ্যালেঞ্জ, নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, "একটি সরকারকে ভেতর ও বাইরে থেকে দেখার অভিজ্ঞতা একেবারে ভিন্ন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন দায়িত্ব নেয়, তখন বাংলাদেশের জন্য পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। এটা আমার জন্য একটি বড় অভিজ্ঞতা ছিল।"

তিনি আরো জানান, "সময়ের প্রয়োজনে আমি পদত্যাগ করেছি এবং মূলধারার রাজনীতিতে যোগ দিয়েছি। এখন আমি এই অভিজ্ঞতা আমার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক যাত্রায় কাজে লাগাতে চাই—বিশেষত যখন সামনে আরও কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হব। একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা নতুন চ্যালেঞ্জ হলেও, আমি এই পথ পাড়ি দিতে প্রস্তুত।"

নিজ দলের ব্যাপারে তিনি বলেন, "এনসিপি একটি মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল, এবং আমরা এই আদর্শ অনুসরণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের উদ্দেশ্য হলো তরুণদের এবং সমাজের অন্যান্য শ্রেণির মানুষকে রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা, যারা দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত রাজনীতির বাইরে ছিলেন।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে কাজ করছি। নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং ক্ষমতার কাঠামো পরিবর্তন করাও আমাদের মূল লক্ষ্য। এজন্য আমরা বিভিন্ন ধারণা পর্যালোচনা করছি এবং মতামত গ্রহণ করছি।"

নির্বাচন প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, "আমাদের মূল লক্ষ্য হলো পূর্ববর্তী সরকারের অপরাধীদের বিচার করা, দেশে স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করা এবং গণপরিষদ গঠন করা। আমরা সংবিধান ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারের পক্ষেও, যাতে ফ্যাসিবাদী শাসন ফিরে আসতে না পারে। তাই নির্বাচন আমাদের এখনকার অগ্রাধিকার নয়, এবং আমরা এ বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করছি না।"

বাঁধন/সিইচা/সাএ