সর্বশেষ :
চাকরি বাজার

সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী ও বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের সময় লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনে দ্বিতীয় সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, যিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নোবেল পুরস্কারের পেছনে বেগম খালেদা জিয়া এবং প্রিন্স চার্লসের অবদান তুলে ধরেছেন। বুধবার দুপুরে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি এই তথ্য শেয়ার করেন। ব্যারিস্টার কাজল তার পোস্টে উল্লেখ করেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমানে ইংল্যান্ড সফর করছেন এবং তিনি প্রিন্স চার্লস থেকে সম্মানসূচক পদক গ্রহণ করবেন। এছাড়া ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে নানা দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে। তিনি জানান, বিশ্বজুড়ে পরিচিত ‘নোবেলজয়ী’ ড. ইউনূসের পুরস্কার পাওয়ার পেছনে দুই ব্যক্তির ভূমিকা তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন—একজন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, আরেকজন ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রিন্স চার্লস, যিনি বর্তমানে রাজা তিন নম্বর চার্লস। বেগম খালেদা জিয়ার সহযোগিতায় তিনি ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বরে লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনে দ্বিতীয় সচিব হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০০৬ সালের অক্টোবরে সেখান থেকে বিদায় নেন। ২০০৫ সালে রাণী এলিজাবেথ কমনওয়েলথভুক্ত দেশের কূটনীতিকদের জন্য বাকিংহাম প্যালেসে গার্ডেন পার্টি আয়োজন করেন। বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন হাইকমিশনার মোফাজ্জল করিম, ডেপুটি হাইকমিশনার ড. সাইফুল ইসলাম খান ও তিনি নিজে। রাজপরিবারের সদস্যরা একে একে উপস্থিত কূটনীতিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। যখন প্রিন্স চার্লস বাংলাদেশে চলমান বন্যার বিষয় জিজ্ঞাসা করেন এবং সহানুভূতি প্রকাশ করেন, তখন হঠাৎ করেই বললেন, "What are you doing about Dr. Younus?"। এই প্রশ্নে তারা অবাক হন, কারণ বাংলাদেশের একক ব্যক্তির প্রসঙ্গে প্রিন্স চার্লসের এ ধরনের প্রশ্ন আশা করা ছিল না। তিনি আরও বলেন, "I & Hilary are trying for Younus’s nobel prize. Your government should come forward." হিলারি ক্লিন্টনের নাম শুনে বুঝতে পারেন এটি ড. ইউনূসকে নিয়ে কথা। পরবর্তীতে হাইকমিশনাররা এই বিষয়টি গুরুত্বসহকারে সরকারের কাছে জানাতে নির্দেশ পান। তিনি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি পৌঁছে দেন। প্রধানমন্ত্রী প্রথম প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “বাংলাদেশের একজন মানুষের নোবেল পাওয়া আমাদের জাতির জন্য গর্বের বিষয়। আমরা ড. ইউনূসের নোবেল প্রাপ্তির জন্য সবরকম সহযোগিতা করব।” এরপর হাইকমিশনার বিষয়টি বিস্তারিত রিপোর্ট করেন এবং পরবর্তী সময়ে ঘটনাটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে নজরদারিতে থাকে। ২০০৫ সালের শেষে কাজল পরিবারের সঙ্গে সুইডেনে যান এবং সেখানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহনাজ গাজীর সঙ্গে কথা বলার সময় জানতে পারেন, সুইডেনে ড. ইউনূসের নোবেল প্রাপ্তি সরকারের শীর্ষ অগ্রাধিকার। বাংলাদেশ সরকার নোবেল কমিটির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে এবং ড. ইউনূস নিজেও সুইডেন সফরে গেছেন। শাহনাজ গাজী জানান, ড. ইউনূসের নোবেল প্রাপ্তি ছিল বাংলাদেশের সম্মানের ব্যাপার, যা শুধু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নয়, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও ব্যক্তিগতভাবে বেগম খালেদা জিয়ার গুরুত্বের বিষয় ছিল। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে ড. মুহাম্মদ ইউনূস নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তার এই অর্জনের পেছনে বেগম খালেদা জিয়ার গুরুত্ব ছিল অসীম, যা সুইডেনে নিযুক্ত পরবর্তী রাষ্ট্রদূত আজিজুল হকও প্রমাণ করেন। এভাবেই ড. মুহাম্মদ ইউনূস নোবেলজয়ী হয়ে বাংলাদেশের গৌরব বৃদ্ধি করেছেন। তবে এই বড় সাফল্যের পেছনে দুই ব্যক্তির ভূমিকা তিনি সরাসরি দেখেছেন—একজন বেগম খালেদা জিয়া, আরেকজন প্রিন্স চার্লস। দেশপ্রেম এবং বন্ধুত্ব উভয়ই এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে জয়ের আশা নিয়ে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। দলের মাঝে প্রবাসী খেলোয়াড়দের অন্তর্ভুক্তি দেশের ফুটবলে নতুন উদ্দীপনা নিয়ে এসেছিল। তবে এত বড় প্রত্যাশার ম্যাচে বাংলাদেশ হতাশ করেছে। সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে প্রায় ১৮ হাজার দর্শকের সামনে বাংলাদেশ হার স্বীকার করেছে ২-১ গোলে।এই হারের পরও এএফসি বাছাইপর্বের ‘গ্রুপ-সি’ তে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয় স্থানে রয়েছে। হংকংয়ের কাছে ১-০ গোলে হারের পর ভারত গ্রুপের তলানিতে নেমেছে। গোলসংখ্যা ও পয়েন্টে সমান থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ভারতের ওপরেই রয়েছে।গ্রুপ-সি তে এখনও চারটি ম্যাচ বাকি। পরবর্তী প্রতিপক্ষ হংকং। যদিও বাকি ম্যাচ থাকায় বাংলাদেশের কৌশল নির্ধারণে এখনই সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হচ্ছে। স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবররার জন্য এটি কঠিন সময়ের সূচনা হতে যাচ্ছে।২০২৭ এএফসি বাছাইপর্বে সব দলই চারটি করে ম্যাচ বাকি রয়েছে। গ্রুপের শীর্ষ দলই এএফসি কাপে উঠবে। আপাতত শীর্ষস্থান দখল করে রেখেছে সিঙ্গাপুর। তারা যদি বাকি সব ম্যাচ জিততে পারে, তাদের পয়েন্ট হবে ১৬। একইভাবে হংকংয়ের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ পয়েন্টও ১৬। অন্যদিকে, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহ হতে পারে ১৩ পয়েন্ট, যা ভারতের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ পয়েন্টের সমান।অক্টোবরে বাকি ম্যাচগুলোর সঠিক ছবি মিলবে। সেই সময় পাঁচ দিনের মধ্যে দুইবার হংকংয়ের সঙ্গে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। প্রথমটি নিজেদের মাঠে, পরেরটি হংকংয়ে।সব মিলিয়ে, বাংলাদেশের জন্য প্রতিটি ম্যাচে জয় জরুরি যাতে তারা জটিল পরিস্থিতি এড়াতে পারে। এর ফলে সিঙ্গাপুরের অ্যাওয়ে ম্যাচে পয়েন্ট হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে, যা তাদের সর্বোচ্চ পয়েন্ট ১৩-এ নামিয়ে আনবে। যদি বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর উভয়ই ১৩ পয়েন্ট অর্জন করে, তবে টাইব্রেকারের মাধ্যমে অবস্থান নির্ধারিত হবে।টাইব্রেকারের নিয়ম অনুযায়ী, প্রথমে হেড-টু-হেড পয়েন্ট বিবেচনা করা হবে। যদি সেখানে সমতা থাকে (উভয় দলই একটি করে জয় পায়), তবে গোল ব্যবধান বিবেচিত হবে। তা না হলে, যাঁরা বেশি গোল করেছেন তাঁরা এগিয়ে থাকবেন।
কমনওয়েলথের মহাসচিব শার্লি আয়োরকর বোতচওয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।সাক্ষাৎটি মঙ্গলবার (১০ জুন) লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়।প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, এই বৈঠকে বাংলাদেশ ও কমনওয়েলথের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সমন্বয়, গণতন্ত্রের প্রসার, জলবায়ু পরিবর্তন, তরুণদের ক্ষমতায়ন এবং ভবিষ্যৎ অংশীদারিত্ব সম্পর্কিত বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়।বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত ড. লুৎফে সিদ্দিকী, লন্ডন অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।এর আগে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে লন্ডনে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা। জানা গেছে, এই সফরে তিনি বাকিংহাম প্যালেসে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং রাজা চার্লসের হাত থেকে ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করবেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার দুই দিনের লন্ডন আলোচনায় নতুন একটি বাণিজ্য কাঠামো গঠনে সম্মত হওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন চীনের প্রধান প্রতিনিধি লি চেংগাং। এই সমঝোতা ৫ জুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও প্রেসিডেন্ট শি’র ফোনালাপ এবং পূর্ববর্তী জেনেভা বৈঠকের সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে গৃহীত। লি চেংগাং বলেন, ‘রাষ্ট্রপ্রধানদের আলোচনার আলোকে আমরা একটি বাস্তবায়ন কাঠামোর প্রাথমিক সম্মতিতে পৌঁছেছি।’ যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লাটনিকও জানিয়েছেন, এই খসড়া এখন ট্রাম্প ও শি’র অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে, অনুমোদন পেলে দ্রুত বাস্তবায়ন শুরু হবে। সোমবার ও মঙ্গলবার লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৈঠকটিকে সাম্প্রতিক উত্তেজনার পর দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। মে মাসে জেনেভা বৈঠকে দুই পক্ষ ৯০ দিনের জন্য পারস্পরিক পণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু এর পরেই উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় দুটি বিষয় নিয়ে— চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বিরল খনিজ রপ্তানিতে বিধিনিষেধ এবং যুক্তরাষ্ট্রের আধা-পরিবাহী প্রযুক্তিতে চীনের প্রবেশ সীমাবদ্ধতা। লাটনিক জানান, চীনের বিরল খনিজ ও ম্যাগনেট রপ্তানিতে থাকা নিষেধাজ্ঞা এই সমঝোতার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে মিটমাট করা হবে, এবং যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা পদক্ষেপগুলোরও ভারসাম্য বজায় থাকবে। বর্তমানে দুই পক্ষই আশাবাদী যে রাষ্ট্রপ্রধানদের অনুমোদনের পর চুক্তি কার্যকর হবে। চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে হোয়াইট হাউজ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল
দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে উত্তেজনা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্ভাবনার সূচনা হয়েছে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ড. ইউনূসের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকের মাধ্যমে। এই বৈঠক নিয়ে রাজনীতির মাঠে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর সম্ভাবনাকে রাজনৈতিক সংকট সমাধানের মোড় হিসেবে দেখছেন।মঙ্গলবার সকালে গুলশানের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় মির্জা ফখরুল বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে লন্ডনে তারেক ও ইউনূসের বৈঠক টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে।” তিনি আরও জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটি তারেক রহমানকে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে।মির্জা ফখরুল উল্লেখ করেন, “১৩ জুন লন্ডন সময় সকাল ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে ড. ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।” তিনি বিশ্বাস করেন, এই বৈঠক রাজনৈতিক অচলাবস্থা দূর করার পথ খুলে দিতে পারে। স্থায়ী কমিটিও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।বৈঠকটি ঘিরে যেমন রাজনৈতিক আগ্রহ বেড়েছে, তেমনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরেও এর গুরুত্ব বাড়ছে। মির্জা ফখরুল বলেন, “জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এই বৈঠকের প্রভাব অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তার লাভ করতে পারে।”তিনি আরও বলেন, “দুই ধরনের শ্রেণি রয়েছে। একদিকে শহরের আরবান এলিটস যারা আছেন, অন্যদিকে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী, যাদের চিন্তাভাবনা ভিন্ন। শহরের মানুষেরা দ্রুত পরিবর্তন আশা করে, সবকিছু দ্রুত ঠিক হতে চায়, কিন্তু গ্রামের মানুষের জীবনে সরকার পরিবর্তন বড় কোনো প্রভাব ফেলে না।”মির্জা ফখরুল যোগ করেন, “বাংলাদেশী জাতি রাজনৈতিক সচেতনতায় অনন্য। সবাই রাজনীতি নিয়ে কথা বলে, সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয়, এবং এই রাজনৈতিক সচেতনতা অন্য কোথাও এতটা দেখা যায় না।”লন্ডনের এই বৈঠক কতটা সফল হবে তা সময়ই বলে দেবে। তবে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের আশাবাদ এই বৈঠক থেকে রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসার ইঙ্গিত দেয়। জাতীয় ঐক্যমত্য ও স্থিতিশীলতার দিকে বাংলাদেশের যাত্রা নতুন মোড় নেবে কি না, সেটাই এখন দেশের সর্বত্র আলোচনার বিষয়।
এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ভারতের হতাশাজনক পারফরম্যান্স অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে ড্র করার পর এবার দ্বিতীয় ম্যাচে হংকংয়ের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তের পেনাল্টিতে হারের মুখ দেখে সুনীল ছেত্রীর দল। বুধবার হংকংয়ে অনুষ্ঠিত ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের চতুর্থ মিনিটে ভারতীয় গোলরক্ষক বিশাল কাইতের একটি ভুলে হংকং পেনাল্টির সুযোগ পায়। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পেরেইরা গোল করে দলকে ১-০ ব্যবধানে জয় এনে দেন। এই পরাজয়ে ভারতের সংগ্রহ দুই ম্যাচে মাত্র এক পয়েন্ট, ফলে তারা ‘সি’ গ্রুপের সর্বনিম্ন স্থানে রয়েছে। সমান পয়েন্ট থাকলেও গোল পার্থক্যের কারণে বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে আছে। ৪ পয়েন্ট করে নিয়ে গ্রুপের শীর্ষ দুই স্থানে রয়েছে সিঙ্গাপুর ও হংকং। ৫৮ মিনিটে মাঠে নামেন ভারতের অভিজ্ঞ খেলোয়াড় সুনীল ছেত্রী, যিনি অবসর ভেঙে দলে ফিরেছেন। তবে তার উপস্থিতিতেও ভারতের দুরবস্থা কাটেনি। রক্ষণের খেলোয়াড় সন্দেশ জিঙ্ঘন ও আনোয়ার আলির ভুলে বারবার চাপে পড়ে ভারত। ম্যাচের শুরুতে হংকং ভারতের রক্ষণভাগের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে গোলের সুযোগ তৈরি করলেও তখন গোল করতে পারেনি। কিন্তু ম্যাচের শেষ দিকে তারা গোল আদায় করতে সক্ষম হয়। বিশাল কাইতের একটি অপ্রয়োজনীয় ফাউলেই হংকংয়ের জয় নিশ্চিত হয়। ম্যাচ শেষে ভারতীয় সমর্থকদের মাঝে হতাশা দেখা দেয়। সুনীল ছেত্রীর পারফরম্যান্স নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বয়সের প্রভাব তার খেলায় স্পষ্ট হলেও কোচ ইগর স্টিমাচের উত্তরসূরি মার্কেজ এখনও তার ওপর আস্থা রাখছেন, যা ভারতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দুর্বল মাল্টার বিরুদ্ধে গোলের বর্ষা বয়ে দিয়েছে নেদারল্যান্ডস। মঙ্গলবার রাতে একটি আধিপত্যমূলক ম্যাচে তারা ৮-০ গোলের জয় নিশ্চিত করেছে। এই ম্যাচে দুটি গোল করে মেমফিস ডিপাই রবিন ফন পার্সির সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড স্পর্শ করেন।খেলা শুরু থেকে রোনাল্ড কুমানের দল ছিল আক্রমণাত্মক। নবম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন মেমফিস ডিপাই। এরপর ১৬তম মিনিটে আরও একটি চমৎকার গোলের মাধ্যমে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন তিনি। এই গোলটি তার জাতীয় দলের জন্য ৫০তম, যা ফন পার্সির সমান রেকর্ড। উভয়ই ১০২ ম্যাচে এই সংখ্যা অর্জন করেছেন।দলের অন্যান্য খেলোয়াড়রাও দুর্দান্ত খেলেন। বদলি হিসেবে নামা ডনিয়েল মালেন দুটি গোল করেন। এছাড়া অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইক, জাভি সিমন্স, নোয়া ল্যাং ও মিকি ফন ডি ফেন প্রত্যেকে একটি করে গোল যোগ করেন।টানা দ্বিতীয় জয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে নিজেদের অবস্থান আরও মজবুত করেছে নেদারল্যান্ডস। আগের ম্যাচে ফিনল্যান্ডকে পরাজিত করে ভালো সূচনা করেছিল দলটি।এই ম্যাচে কোন খেলোয়াড়কে হলুদ কার্ড থেকে বাঁচাতে মাঠে নামাননি ডাচ কোচ। কারণ, পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পোল্যান্ডের বিপক্ষে পুরো শক্তি নিয়েই লড়াই করতে চান তিনি। এই গ্রুপ পর্বের ম্যাচটি ভাগ্য নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের টিকিট আগেই নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টিনা। তাই বাছাইপর্বের বাকি ম্যাচগুলো এখন কোচ স্কালোনির ভবিষ্যতের পরিকল্পনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তবে কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে ড্র করে আর্জেন্টিনার জন্য হতাশার মুহূর্ত এসেছে।বুধবার ভোরে এস্তাদিও মনুমেন্তালে আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ার মধ্যকার ম্যাচটি ১-১ গোলে সমাপ্ত হয়। ম্যাচের ২৪তম মিনিটে লুইস দিয়াজের অসাধারণ এক গোলে এগিয়ে যায় কলম্বিয়া। তবে ৮০ মিনিটে থিয়াগো আলমাদার গোলে সমতা ফেরায় আর্জেন্টিনা, যারা ম্যাচের শেষভাগে ১০ জনের দল ছিল।ম্যাচ শুরু থেকে লিওনেল মেসিকে খেলিয়েছেন স্কালোনি। শুরুতেই মেসির ফ্রি কিক থেকে আর্জেন্টিনা আক্রমণ গড়ে তোলে। যদিও কলম্বিয়ার ফুটবলাররা বল ক্লিয়ার করলেও এনজো ফের্নান্দেজ সুযোগ নেন এবং মেসির কাছে বল ফেরত দেন। আর্জেন্টাইন অধিনায়কের ডান পায়ের শট গোলবারের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়।১৬ মিনিটে কলম্বিয়া আক্রমণ করে, যেখানে হামেশ রদ্রিগেজের পাসে মাচাদো শট নেয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু সফল হননি। ২২ মিনিটে হুলিয়ান আলভারেজ বক্সের সামনে থেকে শট নেন, যা কলম্বিয়ার গোলকিপার রোধ করেন।২৪ মিনিটে লুইস দিয়াজের অসাধারণ এক ব্যক্তিগত গোল আর্জেন্টিনার দর্শকদের হতবাক করে দেয়। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে বাঁ দিকে বক্সে ঢুকে তিনি একে একে তিন আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে গোল করেন।৩০ মিনিটে ফের্নান্দেজ একটি গোল করতে পারলেও অফসাইডের কারণে তা বাতিল হয়। ৩৯ মিনিটে আলভারেজের শট ব্লক করে কলম্বিয়া ডিফেন্স সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে।প্রথমার্ধ শেষে আর্জেন্টিনা ১-০ গোলে পিছিয়ে ছিল।দ্বিতীয়ার্ধের ৭০ মিনিটে ফের্নান্দেজ ফাউল করলে রেফারি তাকে লাল কার্ড দেখান, কারণ তার বুট কাস্তানোর মাথায় লেগেছিল।৭৮ মিনিটে মেসিকে নামানো হয় এবং তার পরিবর্তে মাঠে নামেন এজিকুয়েল পালাসিওস, যিনি নেমেই ভালো ছাপ ফেলেন। দুই মিনিট পর বক্সের সামনে আলভারেজকে বল পাস দেন, তবে শট ব্লক হয়।৮১ মিনিটে পালাসিওসের পাস ধরে দুই ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে থিয়াগো আলমাদার ডান পায়ে শট মেরে গোল করেন। তার এই গোলে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা ড্র নিয়ে।
শুরুতে ভালো পারফরম্যান্স দেখালেও ইংল্যান্ড শেষ পর্যন্ত লজ্জাজনক পরাজয় বরণ করে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হলো। হ্যারি কেইনের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল টমাস টুখেলের দল, কিন্তু এরপর সেনেগাল ফিরে এসে অসাধারণ এক জয় লাভ করে। মঙ্গলবার রাতে সিটি গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত প্রীতি ম্যাচে ইংল্যান্ড ৩-১ গোলের ব্যবধানে হেরেছে। আফ্রিকার কোনো দলের বিরুদ্ধে এটি ছিল ইংল্যান্ডের ২২ ম্যাচে প্রথম পরাজয়। সেনেগাল ২৪ ম্যাচের দীর্ঘ অপরাজিত ধারাকে অব্যাহত রেখেছে। অন্যদিকে, টুখেলের অধীনে ইংল্যান্ড প্রথমবারের মতো পরাজিত হলো। আগের ২১ ম্যাচে আফ্রিকার কোনো দল ইংল্যান্ডকে হারাতে পারেনি; ১৫ জয় এবং ৬ ড্র ছিল তাদের রেকর্ড। কিন্তু আজ সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে সেনেগাল। ইংল্যান্ড অবশ্য ঘরের মাঠে শুরু করেছিল শক্তিশালী, কারণ মাত্র ৭ মিনিটেই অধিনায়ক হ্যারি কেইনের গোলের মাধ্যমে লিড নিয়েছিল তারা। ইংল্যান্ডের জন্য রাতটা সাফল্যের না, বরং চমকে দেওয়ার ছিল। প্রথমার্ধের শেষ দিকে ইসমাইলা সার সেনেগালের হয়ে সমতা ফিরিয়ে আনেন। বিরতির পরে খেলা আবার শুরু হলে হাবিব ডিয়ারা সেনেগালকে এগিয়ে নিয়ে যান। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের তৃতীয় মিনিটে চেইখ সাবালি ইংল্যান্ডের জালে শেষ গোলটি করেন। ঐতিহাসিক জয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত সেনেগালের অধিনায়ক কালিদু কুলোবালি। ২০২২ সালের আফ্রিকা কাপ অব নেশনসের জয়ের সঙ্গে এই জয়ের তুলনা করে তিনি বিবিসি রেডিও ৫ কে বলেছেন, ‘অবিশ্বাস্য এক রাত ছিল। আমরা জানতাম কিছু করব। ম্যাচ কঠিন ছিল, কিন্তু আমরা আমাদের শক্তি দেখিয়েছি। এই পর্যায়ে খেলার যোগ্যতাও প্রমাণ করেছি। আমরা ইতিহাস গড়তে অভ্যস্ত নই, কিন্তু আফকন চ্যাম্পিয়ন হয়ে তা দেখিয়েছিলাম। গতকাল রাতেও আমরা সেটা প্রমাণ করলাম।’
প্যারাগুয়েকে পরাজিত করে লাতিন আমেরিকা থেকে ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ নিশ্চিত করল ব্রাজিল। এই সাফল্যের মাধ্যমে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দল প্রতিটি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের গৌরব অর্জন করল। বিস্তারিত শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে...
এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে ভারতের কাছে ঘরের মাঠে পরাজয়ের পর, গত বুধবার আবার মাঠে নামেছিল বাংলাদেশ ও ভারত। উভয় দলই তাদের ম্যাচে হার স্বীকার করেছে। ভারতের পেনাল্টিতে হংকংয়ের কাছে পরাজয় হয়েছে যোগ করা সময়ে, যেখানে বাংলাদেশ ২-১ গোলে সিঙ্গাপুরের কাছে হেরেছে কঠোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর। এই হারের ফলে ভারত এখন ‘সি’ গ্রুপের পয়েন্ট তালিকার সর্বনিম্নে চলে গেছে, দুই ম্যাচে মাত্র এক পয়েন্ট অর্জন করে। বাংলাদেশ একই ম্যাচ ও পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে রয়েছে। টেবিলের শীর্ষস্থান দখলে আছে সমান পয়েন্ট নিয়ে সিঙ্গাপুর ও হংকং। হংকংয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত ম্যাচে, অবসর ভেঙে ফিরে আসা ভারতীয় ফুটবল তারকা সুনীল ছেত্রী ৫৮ মিনিটে মাঠে নামলেও দলের জয় নিশ্চিত করতে পারেননি। গোলরক্ষক বিশাল কাইতের ভুলে ভারতের পতন ঘটে; যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে হংকংয়ের ফুটবলারের মুখে আঘাত করে তিনি পেনাল্টি ডেকে দেন। পেরেইরা সেই সুযোগে নির্ভুল শটে গোল করেন। শেষ মুহূর্তে গোল হজমের পর ভারত আর সমতা ফিরিয়ে আনতে পারেনি। সুনীল ছেত্রীর অতীতের ছায়া যেন ম্লান, তার দক্ষতায় অবনতি হয়েছে এবং কোচ মার্কেজ তার ওপর বেশি নির্ভর করছেন, যা ভারতীয় দলের জন্য সমস্যার কারণ হচ্ছে। হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচের শুরু থেকেই ভারতীয় খেলোয়াড়দের দিশাহীনতা লক্ষ্য করা গেছে, বিশেষ করে মাঝমাঠ ও রক্ষণে ভুলের ফলে হংকং গোলের সুযোগ পেয়েছিল প্রথম তিন মিনিটের মধ্যে। ভারতীয় দলের রক্ষণভাগ ক্রমাগত চাপের মুখে ভুল করেছে, বিশেষ করে সন্দেশ জিঙ্ঘন ও আনোয়ার আলিরা। তবে ম্যাচের মূল সময়ে দুই দলই গোল হজম করতে পারেনি, যেটি অতিরিক্ত সময়ে বদলে যায়।
ঈদ উপলক্ষে নির্মিত নাটক ‘আশিকি’ একটি অনন্য সাফল্যের গল্প হয়ে উঠেছে। ইমরোজ শাওনের পরিচালনায় নাটকে রকস্টার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফারহান আহমেদ জোভান। তবে নাটকের ট্রেলার প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় সমালোচনা। গিটার হাতে গান গাওয়া সময় জোভানের অভিনয়কে অনেকেই ‘অতিরঞ্জিত’ বলেছিলেন। ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপে ট্রোল শুরু হয়, তৈরি হয় প্রচুর মিম ও ব্যঙ্গচিত্র। কিন্তু নাটকটি ইউটিউবে মুক্তির পর পরিস্থতি বদলে যায়। দর্শকরা নাটকটি দেখতে শুরু করেন এবং মুক্তির দ্বিতীয় দিনে এটি ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ের দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে—নাটকের ঘরানায় এটিই সর্বোচ্চ স্থান। ঈদের দিন মাছরাঙা টিভিতে প্রচারের পর ৮ জুন সিএমভি ইউটিউব চ্যানেলে ‘আশিকি’ প্রকাশ পায়। মাত্র দুই দিনে ভিউ সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় ৬০ লাখ। ইউটিউব কমেন্টে ৯ হাজারেরও বেশি প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে, যার বেশিরভাগই নাটক ও অভিনয়ের প্রশংসায় ভরা। নাটকের গল্পে দেখা যায়, আশিক ছোট শহর থেকে বড় শহরে এসে কলেজে ভর্তি হয় বাবার স্বপ্ন পূরণের জন্য। গান গাওয়া ভালো হলেও তার সাধারণ চেহারা, দাগ-ছাপ এবং বড় দাঁত থাকার কারণে সমাজ তাকে অবহেলা করে। পরে সে ধনী পরিবার থেকে জেসিয়ার প্রেমে পড়ে, কিন্তু জেসিয়া তার প্রস্তাবে প্রকাশ্যে অপমান করে। এক সময় একজন প্রসিদ্ধ সংগীত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করে আশিক গায়ক হিসেবে নিজের অবস্থান গড়ে তোলে। নির্মাতা বলেন, ‘আশিকি’ শুধু একজন শিল্পীর সংগ্রাম ও সাফল্যের কাহিনী নয়, এটি একটি অসম প্রেমের আবেগময় বিবরণও বয়ে আনে। নাটকে জেসিয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাজনীন নিহা, আর বিশেষ একটি দৃশ্যে কণ্ঠশিল্পী দিলশাদ নাহার কণাও দেখতে পাওয়া গেছে।
দেশে করোনা সংক্রমণ আবারও বাড়তে থাকায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হাসপাতালগুলোতে সীমিত আকারে করোনা পরীক্ষার কার্যক্রম পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রথম ধাপে যেসব মেডিকেল কলেজ ও জেলা হাসপাতালে আরটি-পিসিআর ল্যাব রয়েছে, সেখানে পরীক্ষা শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে। বুধবার (১১ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক হালিমুর রশীদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। তিনি জানান, যেসব হাসপাতাল আরটি-পিসিআর ল্যাব পরিচালনা করে, তাদের পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। পরীক্ষার কিট স্থানীয় কোম্পানি থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং বিদেশ থেকে কিট আমদানির জন্য সিএমএসডি-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অধ্যাপক হালিমুর রশীদ বলেন, আশা করা যাচ্ছে আগামী ১০ দিনের মধ্যে করোনা পরীক্ষা পুনরায় শুরু করা যাবে, তবে তা সীমিত আকারে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, পরীক্ষা শুধুমাত্র করোনার উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য চালু থাকবে, যার মধ্যে থাকবেন— • যাদের জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্টের মত কোভিড–১৯ উপসর্গ রয়েছে। • অথবা যাদের চিকিৎসক পরীক্ষা করার পরামর্শ দেবেন। তিনি আরও বলেন, যদি সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়, তাহলে পরীক্ষার পরিধি বাড়ানো হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা উচ্চ শনাক্তের হার হিসেবে বিবেচিত। এর আগে ৯ জুন মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করা হয় এবং বিমানবন্দরসহ সব প্রবেশপথে হেলথ স্ক্রিনিং অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রবণতা বজায় থাকলে দেশে আবারও করোনা ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাই আগাম সতর্কতার অংশ হিসেবে পরীক্ষা চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোথায় পরীক্ষা হবে? প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও ময়মনসিংহের বিভাগীয় হাসপাতালগুলোতে পরীক্ষা চালু করা হবে। যেসব হাসপাতালে আরটি-পিসিআর ল্যাব রয়েছে, সেখানেই প্রথমে পরীক্ষা শুরু হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জনসাধারণকে মাস্ক পরা, নিয়মিত হাত ধোয়া এবং উপসর্গ দেখা দিলে বাসায় অবস্থানের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। অধ্যাপক হালিমুর রশীদ বলেন, আমরা চাই না পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাক, তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১০ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। ১০১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে এই সংখ্যা পাওয়া গেছে। তবে কোনো মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়নি। তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত সবাই ঢাকা মহানগরীর বাসিন্দা। এর আগে ৯ জুন ৪১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫ জনের করোনা ধরা পড়েছিল। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ২ জন, ফলে মোট সুস্থতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ১৯ হাজার ৩৭৮ জনে।
বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশে তা ছড়িয়ে পড়া রোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১১টি নির্দেশনা জারি করেছে। আজ বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর দেশের বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতি তুলে ধরে এসব নির্দেশনা পাঠ করেন। সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসাধারণের করণীয়- ১. জনসমাগম এড়িয়ে চলুন, জরুরি হলে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করুন। ২. শ্বাসনালী সংক্রান্ত রোগ থেকে রক্ষা পেতে মাস্ক ব্যবহার অপরিহার্য। ৩. কাশি বা হাঁচির সময় বাহু বা টিস্যু দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন। ৪. ব্যবহৃত টিস্যু ঢাকনা যুক্ত আবর্জনা পাত্রে ফেলার ব্যবস্থা করুন। ৫. নিয়মিত অন্তত ২০ সেকেন্ড সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করুন। ৬. অপরিষ্কার হাত দিয়ে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ থেকে বিরত থাকুন। ৭. আক্রান্ত ব্যক্তিদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন, কমপক্ষে ৩ ফুট। সন্দেহজনক লক্ষণ দেখা গেলে করণীয়- ১. জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্ট হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত ঘরেই থাকুন। ২. রোগীর নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করুন। ৩. রোগীর সেবাদানকারীরাও সতর্কতার জন্য মাস্ক ব্যবহার করবেন। ৪. প্রয়োজনে নিকটস্থ হাসপাতাল, আইইডিসিআর (০১৪০১-১৯৬২৯৩) অথবা স্বাস্থ্য বাতায়ন (১৬২৬৩) এর সঙ্গে যোগাযোগ করুন। সরকারি প্রস্তুতি ও সমন্বয় করোনা পরীক্ষা (RT-PCR, Rapid Antigen Test), টিকা, চিকিৎসা নির্দেশিকা, ওষুধ, অক্সিজেন সরবরাহ, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি যেমন High-Flow Nasal Canula, ভেন্টিলেটর, ICU ও HDU, কোভিড বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং সেবাদানকারীদের জন্য নিরাপত্তা সামগ্রী (KN95 মাস্ক, PPE, ফেস শিল্ড ইত্যাদি) নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও সংস্থা সমন্বয়ে কাজ করছে। শীঘ্রই এসব বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হবে। আরএস
দেশে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে মহামারি করোনাভাইরাস। এমন পরিস্থিতিতে গর্ভবতী নারী, ষাটোর্ধ্ব নাগরিক এবং নানা জটিল রোগে আক্রান্তদের জন্য অতিরিক্ত ডোজ টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বুধবার (১১ জুন) দুপুরে রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কার্যালয়ে এক জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. আবু জাফর জানান, বর্তমানে সংস্থাটির হাতে ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৯০০ ডোজ টিকা মজুত আছে, যা থেকে বিতরণ চলবে। তিনি বলেন, এখনো যেসব মানুষ টিকা গ্রহণ করেননি, তাদের মধ্যে যারা ঘন সংস্পর্শের পেশায় যুক্ত, গর্ভবতী বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল—তাদের অবশ্যই টিকা নেওয়া উচিত। যারা আগেই টিকা নিয়েছেন এবং ষাটোর্ধ্ব বা শারীরিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ, তাদের ক্ষেত্রেও ছয় মাস পর বুস্টার ডোজ প্রযোজ্য। প্রয়োজনে আগের টিকাগ্রহীতারা নির্ধারিত কেন্দ্রে গিয়ে আবারও টিকা নিতে পারবেন কি না—এমন প্রশ্নে ডা. আবু জাফর জানান, টিকাদান কার্যক্রম এখনো চালু আছে এবং নির্ধারিত কেন্দ্রগুলোতে গেলে টিকা প্রদান সম্ভব। মজুদ থাকা টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক হালিমুর রশিদ জানান, ইউএস-সিডিসির গাইডলাইন অনুযায়ী ২০২৪-২৫ সালের জন্য নির্ধারিত টিকা ওমিক্রনের বিরুদ্ধে কার্যকর। তবে দেশে মজুদ টিকাগুলোও রোগের তীব্রতা কমাতে সক্ষম। তিনি আরও বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসারে, সর্বশেষ সংস্করণের টিকা না থাকলেও পুরনো টিকা রোগের গুরুতর প্রভাব রোধে কার্যকর। তাই এখন যেসব টিকা হাতে আছে, সেগুলোই বিতরণের সুপারিশ করা হয়েছে। নতুন টিকা সংগ্রহের উদ্যোগও শিগগিরই নেওয়া হবে। করোনাভাইরাস পরীক্ষা বর্তমানে সব হাসপাতালে হচ্ছে কি না—এমন প্রশ্নে ডা. আবু জাফর বলেন, সাধারণ মানুষের নিয়মিত টেস্টের প্রয়োজন নেই। তবে উপসর্গ থাকলে চিকিৎসকরা প্রয়োজন বুঝে পরীক্ষা করাবেন। তিনি জানান, আগামীকাল দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে আরটিপিসিআর কিট বিতরণ করা হবে। ঈদের কারণে সরবরাহ কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। কিটের পরিমাণ ও প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী তালিকা প্রস্তুত আছে। এছাড়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক বিভাগের পরিচালক ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান জানান, সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় জেলা পর্যায়ের সব সরকারি হাসপাতালে শয্যা প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দেশে করোনার সংক্রমণ কিছুটা বাড়লেও স্বাস্থ্য অধিদফতর তা নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তার কোনও কারণ দেখছে না। তবে তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে সতর্ক করছে।বুধবার (১১ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর জানান, ভয় পাওয়ার কারণ নেই। টিকার কার্যক্রম এখনও অব্যাহত রয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৭ লাখ টিকা বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর্মীর কাছে পৌঁছে গেছে এবং ১৪ লাখ টিকা মজুত রয়েছে।তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশী দেশের তুলনায় বাংলাদেশে করোনার নতুন ধরনে আক্রান্তের সংখ্যা কম রয়েছে, তাই এখন আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই।মহাপরিচালক জানান, ইতিমধ্যে ২৮ হাজার র্যাপিড টেস্ট কিট সংগ্রহ করা হয়েছে এবং ১০ হাজার আরটিপিসিআর কিট দ্রুত সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বন্ধু রাষ্ট্রের সঙ্গে কিট সংগ্রহের বিষয়ে যোগাযোগ রয়েছে। তাই কিটের অভাব হবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট কতটা মারাত্মক হবে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, এ ব্যাপারে এখনো নির্দিষ্ট গবেষণা হয়নি, সময়ের সঙ্গে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।আরএস
সুচিত্রা সেন, ভারতীয় সিনেমার একজন কিংবদন্তি অভিনেত্রী। এক সময় তার সৌন্দর্য এবং অভিনয় দক্ষতায় ভক্তরা উন্মত্ত থাকতেন। পুরো চলচ্চিত্র জগত তাকে ঘিরে এক ধরনের আবেগময় পরিবেশ তৈরি হতো। কিন্তু মহানায়িকা যখন সিনেমা থেকে সরে গেলেন, তখনও তাঁর প্রতি মানুষের আগ্রহ কমেনি। আজও বাঙালি মানুষ সুচিত্রা সেনের ম্যাজিক থেকে বিমোহিত। তবে বাংলা সিনেমার প্রথিতযশা অভিনেত্রী লিলি চক্রবর্তী সুচিত্রাকে মহানায়িকা হিসেবে মানতে নারাজ। তার মতে, বাংলা সিনেমার একমাত্র আসল মহানায়িকা হলেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, সুচিত্রা নন। সুদীর্ঘ সময় ধরে সুচিত্রা, সাবিত্রী ও সুপ্রিয়া—এই তিন নায়িকার মধ্যে প্রতিযোগিতা চলে এসেছে। তাঁদের মধ্যে কে উত্তম কুমারের সঙ্গেই বেশি মানানসই, তা নিয়েও নানা মতবিরোধ হয়। তবে সাধারণত এই লড়াইয়ে সুচিত্রার জাদুই আবেদন আলাদা মনে করা হয়। যদিও তিন নায়িকার নামেই অনেক সফল ছবি রয়েছে, তখনকার দর্শক এবং বিশ্লেষকরা সুচিত্রার ম্যাজিক বেশি বলতেন। কিন্তু লিলি চক্রবর্তীর দৃষ্টিতে বিষয়টা ভিন্ন। সম্প্রতি ইউটিউবের আড্ডা স্টেশন চ্যানেলে এক সাক্ষাৎকারে লিলি চক্রবর্তী বলেছেন, মহানায়িকা বলতে গেলে অবশ্যই সাবিত্রীকেই ধরা উচিত। হয়তো চেহারার দিক থেকে তিনি সুচিত্রার সমান নন, তবে অভিনয়ের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন শ্রেষ্ঠ। তিনি আরও বলেন, সাবিত্রী যেকোনো চরিত্রে এত নিপুণ অভিনয় করতেন, যা সুচিত্রা সহজে করতে পারতেন না। তবে অবশ্যই, ইন্ডাস্ট্রির সবাই সুচিত্রাকে খুবই পছন্দ করতেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ১০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ে ১০৭টি নমুনা পরীক্ষায় এই সংক্রমণ ধরা পড়ে। তবে এই সময়ে কোনো মৃত্যু হয়নি। এখন পর্যন্ত দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৭৭০ জনে। বুধবার (১১ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনাক্ত হওয়া সবাই ঢাকার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। এর আগের দিন (১০ জুন) ১০১টি নমুনা পরীক্ষায় ১৩ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়ে। বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও দুইজন। এ নিয়ে মোট সুস্থতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ১৯ হাজার ৩৮০ জনে। মহামারি শুরুর পর থেকে দেশে মোট শনাক্তের হার ১৩.০৫ শতাংশ এবং গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৯.৩৫ শতাংশ। ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথমবারের মতো তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। এরপর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম একজনের মৃত্যুর খবর আসে। ২০২১ সালের ৫ ও ১০ আগস্ট দিনে সর্বোচ্চ ২৬৪ জন করে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। আরএস
দেশে ডেঙ্গু রোগের সংক্রমণ ক্রমশ বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মোট ২৮৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৬১ জনই বরিশাল থেকে। তবে নতুন করে কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। বুধবার (১১ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন, যেখানে বরিশাল বিভাগ থেকে ২৬১ জন, ঢাকা দক্ষিণে ১২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১১ জন, ময়মনসিংহে ২ জন এবং রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগে একজন করে রোগী রয়েছে। আরএস
অ্যাপল তাদের বার্ষিক Worldwide Developer Conference (WWDC) ২০২৫-এর প্রধান ইভেন্টে বিভিন্ন ডিভাইস এবং অপারেটিং সিস্টেমে অসাধারণ নতুনত্বের ঘোষণা করেছে। ২০২৫ সালের শেষের দিকে iOS, iPadOS, macOS, watchOS, tvOS ও visionOS ২৬ বাজারে আসবে, যা উন্নত ডিজাইন, মাল্টিটাস্কিং সুবিধা, AI ক্ষমতা এবং গেমিং অভিজ্ঞতা নিয়ে আসবে। ডেভেলপাররা আজ থেকেই বেটা ভার্সন ব্যবহার করতে পারবেন। ১৩টি মূল পরিবর্তন ১. অপারেটিং সিস্টেমের নতুন নামকরণ iOS ২৬, iPadOS ২৬, macOS ২৬, watchOS ২৬, tvOS ২৬ এবং visionOS ২৬ - এবার বছরের নামের সঙ্গে ভার্সন মিলবে। ২. Liquid Glass থিমের আগমন সব অপারেটিং সিস্টেমে নতুন Liquid Glass থিম যুক্ত হয়েছে, যা বাটন, সুইচ, স্লাইডার এবং মিডিয়া কন্ট্রোলকে আরও স্বচ্ছ ও আধুনিক দেখাবে। iOS ২৬-এর লকস্ক্রিনেও এই ডিজাইন থাকবে। ৩. ক্যামেরা, সাফারি ও ফোন অ্যাপের নতুন ডিজাইন Safari এখন ফুল স্ক্রিনে কাজ করবে। ক্যামেরায় সহজ ও পরিষ্কার লেআউট, শুধু Photo ও Video অপশন। ফোন অ্যাপে Favorites, Recents ও Voicemail একই জায়গায় পাওয়া যাবে। ৪. iPadOS ২৬-এ মাল্টিটাস্কিংয়ের উন্নতি অ্যাপ উইন্ডোর সাইজ বদল, নতুন মেনুবার, উন্নত মাউস পয়েন্টার এবং ম্যাকের মতো Preview অ্যাপ যোগ করা হয়েছে। ৫. Messages-এ ব্যাকগ্রাউন্ড কাস্টমাইজেশন ও পোল ফিচার গ্রুপ চ্যাটে পোল করার সুবিধা, কাস্টম ব্যাকগ্রাউন্ড ও অজানা নম্বরের মেসেজ আলাদা ফোল্ডারে রাখা যাবে। ৬. নতুন Games Hub Apple Arcade এবং App Store-এর গেমগুলো একই প্ল্যাটফর্মে পাওয়া যাবে। বন্ধুদের সঙ্গে একসাথে খেলার Play Together ফিচার যুক্ত হয়েছে। ৭. macOS Tahoe ২৬-এ উন্নত Spotlight ব্যক্তিগতকৃত সার্চ এবং নতুন ফিল্টার অপশন যুক্ত হয়েছে। ম্যাকেও ফোন ও নতুন Games অ্যাপ পাওয়া যাবে, সাথে iPhone-এর Live Activities সাপোর্ট থাকবে। ৮. Vision Pro-তে PSVR2 কন্ট্রোলার সাপোর্ট PlayStation VR2 Sense কন্ট্রোলার সাপোর্ট, চোখের দৃষ্টিতে স্ক্রল এবং নতুন স্পেশাল উইজেট এসেছে। ৯. Apple Intelligence দিয়ে স্ক্রিন সার্চ iOS ২৬-এ স্ক্রিনশট বাটনে AI সহকারী চালু হবে, যা ChatGPT, Google, Etsy-তে সরাসরি অনুসন্ধান সুবিধা দেবে। ১০. watchOS ২৬-এ নতুন "wrist flick" জেসচার হাত নাড়িয়ে নোটিফিকেশন বন্ধ করার সুবিধা এবং AI চালিত Workout Buddy পরামর্শ দেবে। ১১. লাইভ ট্রান্সলেশন সুবিধা Messages, FaceTime এবং ফোন কলের সময় রিয়েল-টাইম অনুবাদ ও লাইভ সাবটাইটেল থাকবে। ১২. এয়ারপডসে ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ AirPods ব্যবহার করে iPhone বা iPad থেকে ছবি তোলা যাবে এবং স্টুডিও মানের ভয়েস রেকর্ডিং সম্ভব হবে। ১৩. ডেভেলপারদের জন্য AI মডেল উন্মুক্তকরণ Apple Intelligence-এর on-device বড় ভাষা মডেল এখন ডেভেলপাররাও ব্যবহার করতে পারবেন। সূত্র: দ্যা ভার্জ
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের লন্ডনের চ্যাথাম হাউসে রয়েল ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সে দেওয়া বক্তব্যের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করে প্রশ্ন তুলেছেন পরিচিত অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান, যিনি সামি নামে বেশি পরিচিত। বুধবার নিজের ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে তিনি ওই অনুষ্ঠান এবং সেখানে উপস্থিত শ্রোতাদের নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। সামি তার পোস্টে লিখেছেন, ‘অসাধারণ এক দৃশ্যপট, একই ব্যক্তিরাই সহযাত্রী, আবার একই ব্যক্তিরাই শ্রোতাও।’ পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেন, ‘শেখ হাসিনাও এমনটাই করতেন, যাদের প্লেন ভর্তি করে নিয়ে যেতেন কিংবা যারা বিদেশে তার প্রশংসা করতেন তাদেরই ডেকে এসব সভার আয়োজন করা হতো। তারপর থেকে চয়েস করে প্রশ্ন করা হতো।’
বাংলাদেশের জুলাই বিপ্লব নামে পরিচিত ছাত্র-জনতা আন্দোলনে অংশ নেওয়া নিউটন দাস ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একজন ভোটার বলে একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।দেশের ভোটার তালিকায় অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিউটন দাস পশ্চিমবঙ্গের কাকদ্বীপ বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটার হিসেবে নাম আছে। কাকদ্বীপ সুন্দরবনের নিকটবর্তী একটি এলাকা, যা দুই দেশের সীমান্ত অঞ্চলে অবস্থিত।গত বছরের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের ক্ষমতা পরিবর্তনের আন্দোলনে অংশ নেওয়া নিউটন দাসের কিছু ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লেও তিনি দাবি করেছেন যে, তিনি ভারতের নাগরিক। তবে তিনি বাংলাদেশের বিক্ষোভে সক্রিয় থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেননি। নিউটন দাস একটি ভিডিও বার্তায় জানান, ২০২৪ সালে পৈতৃক সম্পত্তি সংক্রান্ত সমস্যার কারণে তিনি বাংলাদেশে গিয়েছিলেন এবং সেখানেই বিপ্লবের সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি আরও জানান, ২০১৪ সাল থেকে কাকদ্বীপে ভোটার হলেও ২০১৭ সালে তার ভোটার কার্ড হারিয়ে যায়। পরে ২০১৮ সালে স্থানীয় বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরার সহায়তায় তিনি নতুন কার্ড সংগ্রহ করেন।দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিউটন ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের মন্টুরাম পাখিরাকে ভোট দিয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে তিনি ভারতে আছেন নাকি বাংলাদেশে, তা স্পষ্ট করেননি।নিউটনের এক চাচাতো ভাই তপন দাস জানিয়েছেন, নিউটন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং দুই দেশে ভোট দিয়েছেন। তবে তার এই বক্তব্য নিউটনের কথার সঙ্গে মিলছে না বলে হিন্দুর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।কাকদ্বীপের বাসিন্দা তপন সাংবাদিকদের জানান, মহামারির পর নিউটন জমি বিক্রি করতে এখানে এসেছিলেন, এরপর আর আসেননি। তিনি বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করায় সেখানে ভোটারও। দুই দেশের ভোটার তালিকায় নাম থাকা তার ভুল বলে দাবি করেন তিনি। এই ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) অভিযোগ করেছে, তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের ভোটার তালিকায় বাংলাদেশিদের নাম যুক্ত করেছে।বিরোধী দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় লাখ লাখ বাংলাদেশি রয়েছে। তিনি আরও বলেন, মুর্শিদাবাদ জেলার ভোটার তালিকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের’ সদস্য সাদ শেখও ছিল। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সোশ্যাল মিডিয়ায় নিউটনের ঘটনাকে ‘এগিয়ে বাংলা মডেলের আরেকটি উদাহরণ’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশের কোটা আন্দোলনে লাঠি হাতে এই নিউটনকে দেখা গিয়েছিল, আর আজ তিনি কাকদ্বীপের নিবন্ধিত ভোটার!অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা বলেন, আন্তর্জাতিক সীমান্ত রক্ষা এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধের দায়িত্ব সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী (বিএসএফ) ও কেন্দ্রীয় সরকারের।তৃণমূল নেতা কুনাল ঘোষ বলেন, মানুষ যেভাবেই আসুক—স্থল, নৌ বা আকাশপথে—এর দায়ভার বিএসএফ ও কেন্দ্রের। রাজ্য প্রশাসন অবশ্যই নিজের দায়িত্ব পালন করবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যে সফররত প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেশটির বেশ কিছু সংসদ সদস্যের সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার লন্ডনের পার্ক লেনের দ্য ডচেস্টাটার হোটেলে ‘অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ’ আয়োজিত অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ এমপিরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন। দিনের শুরুতেই এয়ারবাসের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ভাউটার ভ্যান ভার্স অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে তাঁর হোটেলে সাক্ষাৎ করেন। তাছাড়া মেনজিস এভিয়েশনের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট চার্লস ওয়াইলিও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। অধ্যাপক ইউনূস স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ৭:০৫ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে চার দিনের সফরে লন্ডন হিথরো বিমানবন্দরে পৌঁছান।
ঈদের ছুটির সময় দেশের রাজনীতির আলোচনা কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে আগামী শুক্রবার লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক।জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা ও সম্ভাব্য রোডম্যাপ নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যে এই দুই শীর্ষনেতার সাক্ষাৎ বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।বিশেষ করে নির্বাচনের প্রাথমিক ঘোষণা ও বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সরকারের দূরত্বের কারণে এই বৈঠক নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল।সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়, এবং বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তার পর সোমবার রাতে নীতিনির্ধারণী ফোরাম এ বৈঠকে সম্মতি দিয়েছে।শুক্রবার লন্ডন সময় সকাল ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে সেন্ট্রাল লন্ডনে ডরচেস্টার হোটেলে দুই নেতার একান্ত বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যেই চার দিনের সফরে লন্ডনে পৌঁছে হোটেলে অবস্থান করছেন।রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সূত্র জানায়, ব্রিটিশ রাজা চার্লসের কাছ থেকে হারমনি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণের জন্য প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের ব্যাপারে আলোচনা শুরু হয়।গত বছর আগস্টে প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে এ পর্যন্ত দেখা হয়নি। তাই লন্ডন সফরে তাদের সাক্ষাৎ সম্ভবনা নিয়ে জল্পনা সৃষ্টি হয়।সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপি মহাসচিবসহ নেতাদের সঙ্গে প্রাথমিক যোগাযোগের পর প্রধান উপদেষ্টার অফিস থেকে তারেক রহমানকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানানো হয়। সফরের শেষ দিনে বৈঠকের সময় নির্ধারণ করে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বিএনপির সূত্র বলছে, প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত আগ্রহ ও সরকারের সিনিয়র উপদেষ্টাদের প্রচেষ্টায় এই বৈঠক সম্ভব হচ্ছে।ওয়াকিবহালদের মতে, নির্বাচনী রোডম্যাপ নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে বিএনপি আগে বৈঠকে অংশ নিতে অনিচ্ছুক ছিল, তবে সরকারের কয়েকজন প্রভাবশালী উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতনরা বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। ঢাকা ও লন্ডনে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলে ইস্যুগুলো সমাধানের জন্য।অনেকে মনে করেন এই বৈঠক একটি সুযোগ হয়ে দাঁড়াতে পারে যেখানে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন, সংস্কার ও বিচারসহ সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরতে পারবেন এবং তারেক রহমানের মতামত শুনতে পারবেন।ঈদের আগে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচনের ঘোষণা দেন, যা বিএনপি ও সমমনা দল প্রত্যাখ্যান করে এবং ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবি জোরালো করে। তারা বিভিন্ন কারণে বছরের শেষে নির্বাচন দাবি করে আসছে।এই পরিস্থিতিতে বিএনপির অসন্তোষের কারণে লন্ডনে দুই নেতার বৈঠকে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। সরকারের একজন উপদেষ্টাকে মধ্যস্থতার জন্য নিয়োগ দেওয়ায় দলটি আলোচনায় পিছিয়ে পড়ে।দলীয় সূত্র মতে, পূর্বে বিএনপি সরকারের এক উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করার সময় বৈঠকে ওই উপদেষ্টা উপস্থিত থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে। সেই জটিল পরিস্থিতিতে কয়েকজন সিনিয়র উপদেষ্টা দ্রুত ব্যাংককে চিকিৎসাধীন বিএনপি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বৈঠক আয়োজনের অনুরোধ করেন। তারা বৈঠকের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং আলোচনার বিষয়গুলো সামনে রাখেন।ঈদের ছুটির মধ্যে কূটনৈতিক মহল ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠক আয়োজনের জন্য নতুন করে চেষ্টা শুরু করেন। রোববার ও সোমবার সম্ভাব্য বৈঠকের খবর ছড়ালেও বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মতি দেয়নি।স্থায়ী কমিটির সভায় তারেক রহমান বৈঠকের আমন্ত্রণের কথা জানিয়ে নীতিনির্ধারকদের মতামত নেন। নির্বাচনের তারিখ নিয়ে জটিলতা এবং কয়েকটি সংবেদনশীল বিষয় সরাসরি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আশায় কমিটি তাকে বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানায়। একই সঙ্গে তাকে দলের পক্ষে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেয়।বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গুলশানের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই বৈঠক রাজনীতিতে নতুন দিক নির্দেশ করতে পারে। বর্তমান সরকারের প্রধানের সঙ্গে ভবিষ্যৎ সরকারের সম্ভাব্য প্রধানের সাক্ষাৎকে তিনি সময়ের সবচেয়ে বড় ঘটনা হিসেবে আখ্যায়িত করে আশা প্রকাশ করেন যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের পথ তৈরি হবে। তিনি বলেন, এটি রাজনীতির একটি বড় মোড় হতে পারে।
কমনওয়েলথ মহাসচিব শার্লি আয়োরকর বোচওয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।মঙ্গলবার (১০ জুন) লন্ডনের এক হোটেলে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।এর আগে, ৯ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চার দিনের সরকারি সফরে প্রধান উপদেষ্টা ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা হন। পরদিন দুপুর ১২টায় তিনি হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।এই সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন।
কমনওয়েলথের মহাসচিব শার্লি আয়োরকর বোতচওয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।সাক্ষাৎটি মঙ্গলবার (১০ জুন) লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়।প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, এই বৈঠকে বাংলাদেশ ও কমনওয়েলথের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সমন্বয়, গণতন্ত্রের প্রসার, জলবায়ু পরিবর্তন, তরুণদের ক্ষমতায়ন এবং ভবিষ্যৎ অংশীদারিত্ব সম্পর্কিত বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়।বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত ড. লুৎফে সিদ্দিকী, লন্ডন অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।এর আগে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে লন্ডনে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা। জানা গেছে, এই সফরে তিনি বাকিংহাম প্যালেসে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং রাজা চার্লসের হাত থেকে ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করবেন।
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী রেলস্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি ও স্টেশন সংস্কারের দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এই কারণে সাগরদাড়ি এক্সপ্রেসসহ অন্তত চারটি ট্রেন আটকা পড়ে এবং রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। বুধবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে স্টেশনের কাছে সাগরদাড়ি এক্সপ্রেস থামিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। আন্দোলনকারীরা স্টেশন সংস্কার এবং আন্তঃনগর ট্রেন থামানোর দাবি তুলে বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন হাতে নেন। তাদের মূল দাবি ছিল সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও ঢালার চর এক্সপ্রেস ট্রেনের স্টপেজ নিশ্চিত করা এবং স্টেশনটির সংস্কার করা। অবরোধের ফলে মধুমতি এক্সপ্রেস, বনলতা এক্সপ্রেস, সিল্কসিটি ও মহানন্দ ট্রেনগুলো রাজশাহী স্টেশনে আটকা পড়ে। জানা গেছে, ১৯২৯ সালে নন্দনগাছী স্টেশন প্রতিষ্ঠিত হয় নিমপাড়া ইউনিয়নের বরকতপুর এলাকায়। ২০১৫ সালের শেষের দিকে শতবর্ষী এই স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পূর্বে এখানে স্টেশনমাস্টার, টিকিট মাস্টার, পোর্টারম্যান, পয়েন্টসম্যান ও গেটম্যানসহ মোট ১২ জন কর্মী ছিলেন, বর্তমানে শুধুমাত্র একজন পোর্টারম্যান কাজ করছেন। এখন শুধুমাত্র দুটি লোকাল ট্রেন এখানে থামে। এর আগে, ১ মে রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘা উপজেলার হাজারো মানুষ আন্তঃনগর এক্সপ্রেসের স্টপেজ দাবি করে ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। ওই সময় বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও লোকাল মেইল ট্রেনও থামিয়ে প্রতিবাদ হয়, যার কারণে ট্রেন কিছু সময়ের জন্য নন্দনগাছী স্টেশনে আটকা পড়ে। স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় ১০ বছর ধরে স্টেশনটি কার্যত বন্ধ রয়েছে। এখানে আন্তঃনগর ও লোকাল ট্রেনের স্টপেজ নেই, তবে অনেক সময় ক্রসিংয়ের জন্য ট্রেন থামে। স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম বর্তমানে পরিত্যক্ত ও ছাউনি মোড়ানো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেসের গার্ড মজিবুদ দৌল্লা বলেন, বিষয়টি তাদের অজানা ছিল এবং তারা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসনবিরোধী আন্দোলন ঘিরে চলমান অস্থিরতা সামাল দিতে ৭০০ মেরিন সেনা পাঠিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, শহরে শান্তি ফিরবে ততদিন সেনারা অবস্থান করবে। জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রুজে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি কেবল শান্তি চাই। যদি পরিস্থিতি শান্ত হয়, আমরা চলে যাব। তবে যদি অস্থিরতা থাকে, আমরা থাকব— যতক্ষণ না তা শেষ হয়। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা দীর্ঘদিন জেলেই থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ন্যাশনাল গার্ড, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও ইমিগ্রেশন বিভাগ একসঙ্গে অভিযান চালাচ্ছে। ট্রাম্প স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, যদি কেউ ইট ছোড়ে, পুলিশের মুখে থুথু দেয় কিংবা হিংসাত্মক আচরণ করে, তাহলে সেটি যুদ্ধ পরিস্থিতি হিসেবে বিবেচিত হবে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে লস অ্যাঞ্জেলেসের ফেডারেল ডিটেনশন সেন্টারের সামনে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে ট্রাম্প ‘ইনসারেকশন অ্যাক্ট’ প্রয়োগের কথাও ভাবছেন। এদিকে সমালোচকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত একনায়কতন্ত্রের উদাহরণ। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম এটিকে বাস্তবতা বিবর্জিত এবং অনাবশ্যক পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন। বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে সান ফ্রান্সিসকোতেও, যেখানে শান্তিপূর্ণ মিছিল সহিংসতায় পরিণত হয়। ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে বিভিন্ন স্থানে। পুলিশ জানায়, রবিবার রাতজুড়ে অভিযান চালিয়ে ১৪৮ জনকে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ছয়জন অপ্রাপ্তবয়স্ক। তবে পরে বেশিরভাগকে ছেড়ে দেওয়া হয়। হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, যতদিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসছে, ততদিন সেনা মোতায়েন থাকবে এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল
তুরস্কের উদ্যোগে অসুস্থ ও আহত যুদ্ধবন্দিদের বিনিময় করেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, তুরস্কে অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনার পর মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে রাশিয়া ও ইউক্রেন জানায়, তারা গুরুতর আহত ও অসুস্থ বন্দিদের একটি বিনিময় করেছে। তবে কতজন এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। এর একদিন আগে ২৫ বছরের কম বয়সী বন্দিদের নিয়ে প্রথম ধাপে বিনিময় সম্পন্ন হয়েছিল। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি টেলিগ্রামে দেওয়া এক বার্তায় বলেন, আজ আমাদের গুরুতর আহত ও অসুস্থ যোদ্ধাদের ফেরানোর প্রথম ধাপ সম্পন্ন হলো। তাদের দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মানবিক অগ্রগতি। তিনি আরও জানান, এই ধরণের বন্দি বিনিময় ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। জেলেনস্কি বলেন, আমরা প্রতিটি বন্দিকে খুঁজে এনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সরকারি এক ভিডিওতে দেখা যায়, ইউক্রেনীয় পতাকা বা ইউনিটের পতাকায় মোড়ানো বন্দিরা বাস থেকে নেমে ‘গৌরব ইউক্রেনের’ স্লোগান দিচ্ছেন। ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা বিভাগ জানায়, অধিকাংশ মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দি গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত, সংক্রমণ, অঙ্গ হারানো ও মানসিক আঘাতের শিকার। নিরাপত্তার কারণেই সংখ্যা জানানো হয়নি, তা পরে জানানো হবে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রুশ বন্দিদের প্রথমে বেলারুশে নেওয়া হয়েছে এবং সেখান থেকে তাদের রাশিয়ায় এনে চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। তিন বছর পর তুরস্কে পুনরায় শুরু হওয়া শান্তি আলোচনার অন্যতম সাফল্য হিসেবে এই বন্দি বিনিময়কে দেখা হচ্ছে। গত মাসেও হাজার হাজার বন্দি বিনিময় হয়েছিল—যেটি যুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় বিনিময়। গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত আলোচনায় মৃত সেনাদের মরদেহ হস্তান্তরের বিষয়ে দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে, তবে সেই প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি। সূত্র: রয়টার্স